সভায় সেলিম। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যকে পথ দেখাচ্ছেন দুর্গাপুরের মানুষ, সোমবার দুর্গাপুর পুরসভার সামনে সিপিএমের সমাবেশে যোগ দিয়ে দাবি করলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম। এএসপি বাঁচাতে শ্রমিক আন্দোলনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের মানুষ একজোট হয়ে এএসপি নিয়ে লড়াই করে চলেছেন। সারা রাজ্যকে তাঁরা পথ দেখাচ্ছেন। তাঁদের আন্দোলনের জেরে টেন্ডার ডেকেও সাড়া পায়নি সেল।’’
কাটমানি, সারদা, নারদ-কাণ্ডের টাকা ফেরত, শিল্প গড়া, কর্মসংস্থান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, শহরের উন্নয়ন ও দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারীদের পাট্টা দেওয়া-সহ নানা দাবিতে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিছিল করেছে সিপিএম। সকলের জন্য ডিজিটাল রেশন কার্ড, পাড়ায়-পাড়ায় রাস্তা ও নর্দমার সংস্কারের মতো অনেক দাবিও জানানো হয়েছে। শহরের চারটি বরো কার্যালয়ে সিপিএমের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সেই সব কর্মসূচির পরে সোমবার পুরসভার সামনে সমাবেশ করে সিপিএম।
এ দিন সেই সমাবেশে যোগ দিতে এসে সেলিম কারখানা বন্ধের প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারেরই সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এএসপি বিক্রির চক্রান্ত করছে। এ দিকে রাজ্য সরকার ডিসিএল বিক্রি করছে, ডিপিএলকে তিন টুকরো করছে।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনকে ‘তোলাবাজির সংগঠন’ বলে দাবি করে তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘কারখানা বন্ধ হলেও তৃণমূলের লাভ। লোহা কেটে সাফ করে দিয়ে রোজগার হয় ওদের।’’
সেলিমের দাবি, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে আন্দোলন বামেরাই করতে পারে। বিজেপি ও তৃণমূল শুধু বিভেদের রাজনীতি করে। তাঁর কথায়, ‘‘কাজ নেই। অর্থনীতির বেহাল দশা। নজর ঘোরাতে দুই সরকারই মানুষে-মানুষে বিভেদ গড়ে দিচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।’’ এ দিন সমাবেশে ছিলেন দলের নেতা আভাস রায়চৌধুরী, বংশগোপাল চৌধুরী, বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী, পঙ্কজ রায়সরকার প্রমুখ।
সেলিমের অভিযোগ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘লোকসভা ভোটের ফল থেকে পরিষ্কার, বিজেপিকে ইন্ধন দিয়েছে সিপিএম-ই। তাই তাদের দলের নেতাদের মুখে এই সব অভিযোগ মানায় না। মানুষের দাবিদাওযা নিয়ে লড়াই করছে শুধু তৃণমূল।’’ শহরের বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যের অবস্থা বেহাল করে গিয়েছে বামেদের সরকার। এখন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে ওরা।’’