বামেদের জমায়েত। সোমবার কার্জন গেট চত্বরে। ছবি: উদিত সিংহ
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে দলের নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বামেরা। সোমবার বিকালে পঞ্চায়েতে ভোট লুট, গণনায় কারচুপি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বর্ধমান স্টেশন থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। পরে বামেদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেয়। ওই দলে থাকা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আমরা বার বার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। ভোটের দিন কী হতে পারে, সেটাও জানিয়েছিলাম। আমাদের অভিযোগ, আশঙ্কাই সত্যি হল। প্রশাসনের মদতেই পঞ্চায়েত ভোট প্রহসনে পরিণত হল।’’ প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ভোটে চূড়ান্ত জয়-পরাজয় হাইকোর্টের উপরে নির্ভরশীল। এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে যে সব অভিযোগ উঠছে, তার রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
বামেদের অভিযোগ, ভোটের পরে খণ্ডঘোষের নারায়ণপুরে সন্ত্রাসের জেরে অনেকে গ্রামছাড়া রয়েছেন। তাঁদের জরিমানা করা হচ্ছে। একই ছবি গলসিতেও। রানাড়ি গ্রামে চাষ বন্ধ করে দেওয়ার ফরমান জারি করা হয়েছে, গলসির মহড়ারে রবিবার দুপুরে সিপিএম নেতা বিশ্বজিৎ চৌধুরীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বর্ধমান ১ ব্লকের বেলকাশের গড়তালিতে সিপিএমের পার্থ মালিকের বাড়িতেও তৃণমূলের বিজয় মিছিল শেষে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। করে। এ দিন ফের ভোটে কারচুপির অভিযোগও করেন বামেরা। নেতাদের দাবি, মেমারি, ভাতার, পূর্বস্থলি-সহ নানা জায়গায় গণনাকেন্দ্রের বাইরে ব্যালট পাওয়া যাচ্ছে। নানা কারচুপি করে গণনা কেন্দ্রে সিপিএমের জেতা আসন তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অমল হালদারের অভিযোগ, ‘‘রায়নার পলাশন পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনেই আমরা জিতেছিলাম। বেনিয়ম করে বারবার পুনর্গণনা করা হয়। তার পরেও তৃণমূলকে আটটির বেশি আসন দিতে পারল না। আমরা সব তথ্য জোগাড় করেছি। বিডিওদের বিরুদ্ধে কোর্টে যাচ্ছি।’’ প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, যে সব ব্যালট গণনার বাইরে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তা আসলে নকল ব্যালট বলেই মনে হচ্ছে।
তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে মানুষ নেই। ওদের সংগঠন নেই। সব বুথে প্রার্থী দিতে পারেনি। এখন ভোটে ভরাডুবির পরে দায় বাঁচাতে বাম নেতারা মিথ্যা প্রচারে জোর দিয়েছেন।’’