সমীর রায়।
সজ্জন এবং শিক্ষিত হিসেবে রাজনৈতিক মহলে পরিচিত ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময়ের কাউন্সিলর সমীর রায়ের (৭০) মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। পেশায় আইনজীবী, অকৃতদার সমীরবাবু মঙ্গলবার রাতে করোনা-আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘সারি’ ওয়ার্ডে প্রয়াত হয়েছেন। রাতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে পুলিশ।
১৯৫০ সালে সমীরবাবুর জন্ম। বর্ধমান শহরের শ্যামসায়র ঘাটের কাছে যৌথ পরিবারেই তাঁর বড় হওয়া। সিএমএস স্কুলের পরে, রাজ কলেজে পড়ার সময়ে ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাশ করেন। তার আগেই ১৯৭৫ সালে বর্ধমান পুরসভার কংগ্রেসের কাউন্সিলর হন। সেই থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা কাউন্সিলর ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে জেলা কমিটিতে কার্যকরী সভাপতি হন। শহর সভাপতিও হন এক বার। ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটে হেরে যান নিরুপম সেনের কাছে।
তৃণমূলের শহর সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “২০০৮ সালে দু’বার সিপিএমের কাছে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওঁর মৃত্যুতে আমরা শোকস্তব্ধ।’’ তৃণমূল নেতা উত্তম সেনগুপ্তও বলেন, “রাজনীতিতে ওর কাছে অনেক কিছু শিখেছি।’’ তবে ২০১৩ সালে দল তাঁকে পুরপ্রধান না করায় উপ-পুরপ্রধানের পদ নিতে অস্বীকার করেন তিনি। তারপর থেকে পুরসভার গোষ্ঠী রাজনীতিতে ‘বিরোধী’ বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। দলের সঙ্গেও দূরত্বও বাড়ে। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে নির্দল প্রার্থী হয়েও দাঁড়ান।
বিজেপির জেলা সাংগঠনিক (বর্ধমান সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দী বলেন, “খুব ভদ্র মানুষ ছিলেন। এ রকম বিশিষ্ট মানুষকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “বর্ধমান শহরে উনি ছিলেন ভদ্র, শিক্ষিত ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ।’’ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন, “এ রকম মানুষ চলে যাওয়ায় বর্ধমানের রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হল।’’