আপাতত বন্ধই রয়েছে তাঁতযন্ত্র। পূর্বস্থলীতে। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
তাঁতশিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাঁত সমবায়, ‘ক্লাস্টার’, মহাজনদের আবেদন জানালেন রাজ্যের বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
করোনা মোকাবিলায় ‘লকডাউন’-এর জেরে তাঁরা অথৈ জলে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁতিদের অনেকে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁতের হাট। তালা ঝুলছে সুতোর দোকানগুলিতে। মহাজনেরাও শাড়ি কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী, সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম, কাটোয়া-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তের বহু তাঁতি বিপাকে পড়েছেন। তাঁতযন্ত্র বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বাড়িতে।
প্রশাসনের হিসাবে, কালনা মহকুমায় তাঁতির সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক লক্ষ ১০ হাজার মানুষ। এ ছাড়া, সুতো বিক্রি, কাপড় বিক্রি-সহ এই শিল্পের উপরে নির্ভরশীল আরও কয়েক হাজার মানুষ। তাঁতিদের অভিযোগ, গত সাড়ে তিন বছরে নোটবন্দি এবং জিএসটি চালুর ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। এখন করোনা-পরিস্থিতি আরও বিপদ ডেকে এনেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক শ্রেণির তাঁতিরা বাড়িতে শাড়ি বুনে মহাজনের কাছে বিক্রি করেন। তাঁদের কাছে কাজ করেন অনেক তাঁত-শ্রমিক। আবার অনেক তাঁতি শাড়ি বুনে সরাসরি হাটে বিক্রি করেন। ‘লকডাউন’-এর জেরে সব রকম বিক্রিই বন্ধ রয়েছে।
পূর্বস্থলীর নসরতপুরের তাঁতশিল্পী ইমবাজ শেখ, হুমায়ুন শেখদের বক্তব্য, ‘‘একেই নানা ধাক্কায় তাঁতশিল্পের অবস্থা খারাপ। ‘লকডাউন’-এ সব বন্ধ। এর পরে শিল্পের উপরে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। এই দুঃসময়ে সরকার পাশে দাঁড়াক।’’
বৃহস্পতিবার স্বপনবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করেছেন। তার পরেও আমার আবেদন, যে সব তাঁত সমবায়, ক্লাস্টার, মহাজনেরা সাধারণ তাঁতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করে, এই পরিস্থিতিতে তারা যেন তাঁতিদের চাল, ডাল, আলু-সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে পাশে দাঁড়ান।’’
আপাতত শাড়ি বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে বলে জানিয়েছেন তাঁতিরা। মন্ত্রী জানান, সারা বিশ্ব জুড়েই সঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষের জন্য পাশে দাঁড়ানোর মতো বন্দোবস্ত করেছেন, তাতে কারও দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে দাবি মন্ত্রীর।