Coronavirus

ছাড় সত্ত্বেও কাজ থমকেই

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’ চলাকালীন একশো দিনের প্রকল্প থেকে ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরির কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৭:০২
Share:

শুরু হল না কাজ। সোমবার গলসির একটি ইটভাটায়। ছবি: কাজল মির্জা

‘লকডাউন’-এর মধ্যেও আক্রান্ত-এলাকা বলে চিহ্নিত নয়, এমন জায়গায় সোমবার থেকে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। তবে পূর্ব বর্ধমানে কার্যত ‘শিথিলতা’ দেখা গেল না কোথাও।

Advertisement

বরং অন্য দিন রাস্তায় যে পরিমাণ লোক দেখা যাচ্ছিল, এ দিন তুলনামূলক ভাবে কম লোক দেখা যায়। একশো দিনের কাজ বা চটকল, ইটভাটায় কাজও সে ভাবে শুরু করা যায়নি। সরকারি দফতর খোলা থাকলেও সুনসান ছিল ভিতর। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী শুধু বলেন, “সরকারের নির্দেশিকা মেনেই চলা হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন’ চলাকালীন একশো দিনের প্রকল্প থেকে ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরির কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সেই কারণে ‘বাংলা আবাস যোজনা’ প্রকল্পের উপভোক্তাদের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে একশো দিনের প্রকল্পে যুক্ত করা হয়। সোমবার জেলায় ওই প্রকল্প থেকে ২১ হাজার কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে জেলার বেশির ভাগ জায়গায়। ভাতারের চণ্ডীপুর, কানপুর, ভূমশোর, কুলচুণ্ডার মতো কিছু জায়গায় জলদি বোরো চাষ হয়। সেখানে সোমবার থেকেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। মুখে গামছা বেঁধে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে চার-পাঁচ জন মিলে ধান কাটতে দেখা গিয়েছে। আবার রাস্তাতে সে ধান শুকোতে দেওয়া হচ্ছে, এমন ছবিও দেখা গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘরবন্দি ঈশানদের জন্য হাত বাড়িয়ে স্যরেরা

ফুল, মিষ্টির দোকান, রেশন দোকান খোলা থাকলেও, লোকজন বেশি ছিল না বললেই চলে। রেশন ডিলারেরা জানান, বেশির ভাগ উপভোক্তা এক দফায় এক মাসের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গিয়েছেন। সে জন্য দোকান খোলা থাকলেও উপভোক্তাদের দেখা নেই। জেলার একমাত্র চটকল রয়েছে শক্তিগড়ের বড়শুলে। তবে কী পদ্ধতিতে উৎপাদন হবে, দৈনিক শ্রমিক-বণ্টন কী ভাবে হবে, তা নিয়ে জটিলতা থাকায় এ দিন থেকে উৎপাদন শুরু করা যায়নি।

জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, রাস্তার কাজও শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিক ও কাঁচামালের অপ্রতুলতায় কাজ শুরু হয়নি, দাবি প্রশাসনের। পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, “রাস্তার কাজ করতে গেলে পাথর, পিচ দরকার। সে সব কী ভাবে আসবে? তা ছাড়া, শ্রমিক আসেন মুর্শিদাবাদ, ঝাড়খণ্ড থেকে। তাঁদের এ সময় জেলায় আনা মুশকিল। সে জন্য রাস্তার কাজ কী ভাবে হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’

জেলায় ৩০৯টি ইটভাঁটা আছে। কালনা, পূর্বস্থলীতে স্থানীয় ভাবে কাজ শুরু হলেও বেশির ভাগ জায়গায় ভাটা জ্বলেনি বলে জানা গিয়েছে। ইটভাটার মালিকদের দাবি, যে সব জায়গায় কাঁচা ইট পড়ে রয়েছে, সেখানে ভাটা জ্বলেছে। তাঁদের দাবি, সরকার ইটভাটা চালু করতে বললেও ১৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। ভাটা মালিকদের দাবি, হাতেগুনে মরসুমের মেয়াদ বড়জোর ২০-২৫ দিনের। এই সময়ে কাঁচামাল পাওয়ার সমস্যা রয়েছে, আবার উৎপাদিত ইট বিক্রিও করা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের একটি ইটভাটার মালিক ইসমাইল শেখ বলেন, “সরকারের নিয়ম মেনে অল্প সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে ইট তৈরি শুরু হয়েছে, কিন্তু কিনবে কে?” জেলা ইটভাটা মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক দুলেন্দ্রনাথ মিত্র বলেন, “নতুন করে ইটভাটা চালু করা সম্ভব নয়। লকডাউনের আগে যেখানে কাঁচা ইট পড়েছিল, স্থানীয় ভাবে তাঁরাই ভাটা খুলেছেন।’’


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement