প্রতীকী ছবি
দিল্লির নিজামুদ্দিনে ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেওয়া ৩০ জন বিদেশি-সহ ৩৭ জনের হদিস মিলেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে। এই নাগরিকদের দাবি, তাঁরা ‘লকডাউন’ ঘোষণার অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। তবে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষায় করোনার কোনও সংক্রমণ মেলেনি। কিন্তু সরকারি নির্দেশ মতো তাঁদের ‘কোয়রান্টিন’-এ রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ তথা আসানসোল পুরসভার চিকিৎসক শামিম আলম জানান, ৩৭ জনের মধ্যে ১১ জন ইন্দোনেশিয়া ও ১৯ জন বাংলাদেশের নাগরিক। তিন জন হায়দরাবাদ ও দু’জন করে অসম ও পানাগড়ের বাসিন্দা। পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা ১০ ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। তাঁরা কলকাতার বেলগাছিয়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানের ডিসেরগড় হয়ে ২৯ মার্চ আসানসোলের রেলপাড় এলাকার তিনটি মসজিদে এসে ওঠেন।
শামিম আলম বলেন, ‘‘ওই ৩৭ জনের শরীরে করোনার উপসর্গ না মিললেও তিনটি মসজিদে ‘কোয়রান্টিন’-এ রাখা হয়েছে। প্রত্যেককে পাঁচ মিটার দূরত্বে রাখা হয়েছে। করোনা সম্পর্কিত সরকারি বিধি যেন তাঁরা নিয়মিত মেনে চলেন সে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’ ডেপুটি সিএমওএইচ অনুরাধা দেব বলেন, ‘‘আগামী ১৪ দিন তাঁরা কেমন থাকেন, তা পর্যবেক্ষণ করবেন পুরসভার আশাকর্মীরা।’’
মার্চ মাসের শুরু থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দিল্লির আলামি মার্কেজ বাঙ্গালেওয়ালি মসজিদে ধর্মীয় জমায়েতের ডাক দিয়েছিল তবলিঘি জামাত। তাতে যোগ দিতে এসেছিলেন দেশ-বিদেশের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের আবহেই মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরঘিজস্তান থেকে বিদেশিরা এসেছিলেন। এই জমায়েতে যোগ দেওয়া প্রায় ৩৭ জন ২৯ মার্চ আসানসোলের রেলপাড় এলাকার তিনটি মসজিদে আসেন বলে খবর পায় প্রশাসন। এই পরেই মঙ্গলবার রাতে ওই তিনটি মসজিদে যান প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। যেহেতু এলাকাটি আসানসোল পুরসভার অধীনে, তাই পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘কোয়রান্টিন’-এ থাকাকালীন ওই ব্যক্তিদের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। তবে কোনও ভাবেই নিয়ম লঙ্ঘন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের।’’ ওই ৩৭ জন দিল্লি থেকে কবে ও কী ভাবে এই রাজ্যে এসেছেন তার সবিস্তার রিপোর্ট পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তৈরি করা হয়েছে বলে শামিম আলম জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, দিল্লির এই ধর্মীয় সমাবেশ থেকে ফেরা সাত বিদেশি-সহ ন’জনকে মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণের একটি মসজিদ থেকে বার করে কোয়রান্টিনে পাঠাল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন আসানসোলের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তবে কারও শরীরে করোনা উপসর্গ মেলেনি বলে বুধবার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।