ব্যানারে এই লোগো (চিহ্নিত) কেন, প্রশ্ন বিরোধীর। —নিজস্ব চিত্র।
সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ‘বার্নপুর উৎসবের’ কোনও যোগ নেই বলে দাবি। কিন্তু তার পরেও, পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুরের ভারতী ভবনে শুরু হওয়া ওই উৎসবের ব্যানারে কেন ‘বিশ্ব বাংলা লোগো’ ব্যবহার করা রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি ও সিপিএম। যদিও আয়োজকদের দাবি, এর মধ্যে কোনও অন্যায় নেই।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৮তম বার্নপুর উৎসবের সূচনা করেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ। উৎসব শুরুর পরেই আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “ব্যানারে রাজ্য সরকারের বিশ্ব বাংলা লোগো ব্যাবহার করার পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কথাটি লেখা হয়েছে। এর অর্থ, উৎসবটি সরকারি পৃষ্ঠোপোষকতায় হচ্ছে। কিন্তু এর সঙ্গে সরকারের কোনও যোগ নেই। তা হলে, কেন লোগো ব্যবহার?” বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সম্পূর্ণ ভাবে স্থানীয়দের উদ্যোগে আয়োজিত একটি উৎসবে সরকারি তকমা লাগিয়ে, মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। একদা এই উৎসবের সহ-সভাপতি, তথা এলাকার সিপিএম নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ইস্কো-র পুনরুজ্জীবনের আনন্দে বার্নপুর ইস্পাতনগরীর বাসিন্দারা উৎসব শুরু করেছিলেন। আচমকা সেখানে সরকারি লোগো ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”
যদিও উৎসব কমিটির সম্পাদক তথা আসানসোল পুরসভার ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বিশ্ব বাংলার লোগো দেওয়ায় কোনও অন্যায় নেই। কারণ, উৎসব পালনের জন্য সরকারি অনুদান পেয়েছি। তাই এই লোগো দেওয়া হয়েছে।”
কী ভাবে ও কত টাকা অনুদান পাওয়া গিয়েছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। যদিও সে প্রশ্নের উত্তরে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তপন। ঘটনাচক্রে, যে এলাকায় এই উৎসব, সেই ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অশোক রুদ্র। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া, “এমন নানা বিষয়ে মতভেদ থাকার জন্যই উৎসব থেকে চার বছর আগে সরে এসেছি। উৎসবের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। এই উৎসবের সঙ্গে আর বার্নপুরের সাধারণ মানুষের কোনও যোগাযোগ নেই। কিছু বহিরাগত লোকজন এই উৎসব পালন করেন।” তবে ‘বহিরাগত’ বলতে তিনি কাদের কথা বলছেন, নির্দিষ্ট করে কী নিয়ে ‘মতভেদ’, তা অবশ্য ভাঙেননি অশোক।
পাশাপাশি, বিশ্ব বাংলা ‘লোগো’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘অনিয়ম’ হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হলে জেলাশাসক বলেন, “কী ঘটেছে, তা আমার জানা নেই। খোঁজ নেব।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া, কোনও ভাবেই ওই ‘লোগো’ ব্যবহার করা যায় না।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।