এ ভাবেই পড়ে রয়েছে বণ্টন না হওয়া ফ্ল্যাট। নিজস্ব চিত্র।
বহু পুরনো শহর হচ্ছে আসানসোল। যে শহরে প্রচুর গরীব মানুষের বসবাস। ঘুরে দেখলে বোঝা যাবে, তাদের বেশিরভাগই নেই ভালো বাড়ি।। আর এদের জন্যই সরকারের প্রকল্প রয়েছে সকলকে বানিয়ে দাও বাড়ি। হাউসিং ফর অল।
আসানসোল পুরনিগম এলাকায় গরিবদের আবাসন কর্মসূচির কাজ হয়নি বলে অভিযোগ উঠল। পূর্বতন মেয়র এবং পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির জমানায় প্রায় ছ’বছর ধরে সরকারি ‘হাউসিং ফর অল’ কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩,৫১৬ জন বাসিন্দা ঘর বানাচ্ছেন। যার মধ্যে মাত্র সাড়ে ৬৫০ জনের কেবল ভিত ঢালাই হয়েছে। আর এই ৬৫০ জন বাসিন্দা তাদের প্রথম কিস্তির ৯০ হাজার টাকা পাবেন। আবার দেখা যাচ্ছে লিন্টন পর্যন্ত বাড়ি বানিয়েছে ৭১২ জন। ছাদ ঢালাই করেছে ৮৪৩ জন। সম্পূর্ণ বাড়ি তৈরি করেছেন ১,৩১১ জন। আর ২,৩৪৬ জন বাড়ি বানানোর কাজ শুরুই করেনি। এই পরিসংখ্যান আসানসোল পুরো নিগমের ১০৬ ওয়ার্ডের। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের ১৯ জুলাই পর্যন্ত।
২০০৯ সালের আগে আসানসোল পুরনিগম বামফ্রন্টের দখলে ছিল। তখন বিএসইউপি প্রকল্পে সরকারি জায়গায় ফ্ল্যাট তৈরি করে তা গরিবদের মধ্যে বিতরণ করার পরিকল্পনা হয়েছিল। এরকম নটি জায়গায় ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছিল— লেপ্রোসি কলোনি, কাকর ডাঙ্গা, কল্যাণপুর হাউসিং, ধাদকা, কাল্লা, দিলদার নগর, দামড়া ১০ নম্বর পিট এবং দামরা ফুটবল গ্রাউন্ডে। যার মোট ইউনিট হয়েছিল ৮৯৬ টি। যার মধ্যে মাত্র ১৪৮টি বিতরণ করা হয়েছে। ৭৪৭টি খালি পড়ে রয়েছে। এই ঘরগুলি বিতরণ না করার ফলে সেগুলির দশা খারাপ হয়েছে। চারপাশে বড় বড় গাছ ডালপালা ভরে গেছে। ফ্ল্যাটগুলিতে বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে জল প্রায় সমস্ত ব্যবস্থা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে বাড়িগুলি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ফলে উঠেছে প্রশ্ন।
এর উত্তরে আসানসোল পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক বলেন, ‘‘এই ঘরগুলি খুব তাড়াতাড়ি বিতরণ করা হবে। আগে যিনি মেয়র ছিলেন তিনি কারও কথা শুনতেন না। নিজের কথা মত কাজ করতেন। সাধারণ মানুষের কথা ভাবেননি। সেজন্যই এই অবস্থা।’’ পুর নিগমের কমিশনার নিতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি। ইতিমধ্যেই গরিব মানুষেরা যাতে ঘর পান, তার ব্যবস্থা শুরু করেছি।’’
অভিজিতের অভিযোগ, জিতেন্দ্রর জন্যই আসানসোল শিল্পাঞ্চলের গরিব মানুষ নাকি ঘর পায়নি। অভিযোগের জবাবে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘রাজ্যের বড় বড় নেতাদের জন্যই এই অবস্থা আসানসোলের। আর হাউসিং ফর অল প্রকল্প নিয়ে প্রতি অর্থবর্ষে ডিপিআর যায়। এখনকার প্রশাসক বোর্ডের অজ্ঞতার জন্যই এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।’’