নির্মীয়মাণ বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের পরে কেটে গিয়েছে চার দিন। এখনও কালনার হরিহরপাড়ার বিস্ফোরণ কাণ্ডে পুলিশের জালে ধরা পড়েনি বাড়ির মালিক বাবু মণ্ডল। তা ছাড়া গত কয়েক মাসে বিস্ফোরণ, বোমা উদ্ধারের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে কালনায়। পরপর এমন ঘটনায় কালনা শহরের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
বুধবার দুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে শহর ঘেঁষা হরিহরপাড়া এলাকা। পুলিশের অনুমান, সেখানে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। বিস্ফোরণের জেরে ঝলসে যায় তিন জনের শরীর। বর্তমানে তাঁরা কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে সিআইডি-র বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড এলাকায় এসে নমুনা খতিয়ে দেখে জানায়, সম্ভবত সেখানে সকেট বোমা তৈরির কাজ চলছিল। তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বছর ষাটেকের বাবুও। পুলিশের অনুমান, চোট পেয়েও সে চম্পট দেয়। মোবাইল টাওয়ার ধরেও তাঁর হদিস পায়নি পুলিশ। তদন্তের জন্য বাবুর হদিস পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণ, বিস্ফোরণ কাণ্ডে জখম বাকি তিন জন এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
তদন্তে পুলিশের হাতে কিছু তথ্য উঠে এসেছে বলে খবর। একটি সূত্রের দাবি, ঘটনার দিন বাবু এলাকারই এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল। পরের দিন ভোরে সে এলাকা ছাড়ে। তদন্তকারীদের ধারণা, বাবু বেসরকারি কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাচ্ছে। পুলিশের দাবি, এর আগেও বেশ কিছু অপরাধের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বাবুর। এক বার সে চার বছরের জন্য
আত্মগোপন করে।
হরিহরপাড়ার বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই শুক্রবার ফের বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে জখম হয় দু’জন শিশু। এ ছাড়া মাস খানেক আগে পূর্ব সাতগাছিয়ায় এক নেতাকে খুনের চেষ্টার জন্য জগ-বোমা রাখা হয়। সেই ঘটনার তদন্তেও উঠে আসে বাবুর নাম। যদিও সেই ঘটনার এখনও কিনারা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ ছাড়াও নান্দাইয়ে খড়ের পালুই থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হয়।
পরপর এমন ঘটনার কারণ কী? পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, এমন ঘটনার কারণ নিয়ে তাঁরাও ধন্দে।
এই পরিস্থিতিতে শহরের এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘বারবার এমন ঘটনা ঘটছে কালনায়। এর পরে রাস্তায় চলাফেরা করায় দায় হয়ে পড়ছে।’’ কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায় যদিও বলেন, ‘‘বাবুর সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাকে যাতে দ্রুত গ্রেফতার করা যায়, সে জন্য ভিন্ জেলাতেও তদন্তের জাল ছড়ানো হচ্ছে।’’