কবে খুলবে দুর্গাপুর এমএএমসি। প্রতীকী চিত্র।
দুর্গাপুরের বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশন (এমএএমসি) ফের খোলার জন্য কনসোর্টিয়াম তৈরি করেছিল তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। সেই তিনটি সংস্থারই একটি, বিইএমএল-এর আংশিক বিলগ্নিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের দাবি। সংগঠনগুলির মতে, এই পরিস্থিতিতে এমএএমসি ফের খুলবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
২০০২-এ এমএএমসি বন্ধ হয়ে যায়। কারখানা চালু করার জন্য ২০০৭-এ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, বিইএমএল, সিআইএল ও ডিভিসি অংশীদারিতে কনসোর্টিয়াম গড়ার জন্য ‘মৌ’ সই করে। ২০১০-এ কলকাতা হাইকোর্টে নিলামে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায় এই কনসোর্টিয়াম। কারখানার নতুন নাম হয় এমএএমসি ইন্ডাস্ট্রিজ় লিমিটেড (এমএএমসিআইএল)। ঠিক হয় উৎপাদনের দায়িত্বে থাকবে বিইএমএল। উৎপাদিত খনি যন্ত্রাংশ কিনবে সিআইএল। সিআইএল-এর কাছ থেকে কয়লা নেবে ডিভিসি। কারখানা চালু করার জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গড়া হয়। ২০২০-র ডিসেম্বরে কনসোর্টিয়ামের তিন সংস্থার প্রতিনিধিরা এমএএমসি পরিদর্শন করেন। কিন্তু তার পরে কারখানা খোলার বিষয়ে আর কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নজরে পড়েনি বলে অভিযোগ। এখন বিইএমএল-এর বিষয়টি সামনে আসায় কারখানা খোলার বিষয়ে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “বিইএমএল-এর শেয়ার বেসরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাবে। যে সংস্থার হাতে বিইএমএল-এর শেয়ার যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সংস্থাকে চিঠি দিয়ে এমএএমসি খোলার বিষয়ে আর্জি জানিয়েছি।”
মূলত খনির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উৎপাদনের জন্য ১৯৬৫-তে এমএএমসি চালু হয়েছিল দুর্গাপুরে। ফের এই কারখানার তালা খোলা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে। সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী অভিযোগ, “রাজ্য ও কেন্দ্র, দুই সরকারের তরফেই এমএএমসি খোলার বিষয়ে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নজরে পড়েনি।” তবে তৃণমূল নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপ, “চালু লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাই বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। সেখানে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় কোথায় কেন্দ্রের!” যদিও, রাজ্যের একটি কারখানা খোলার বিষয়ে কেন্দ্রের পাশাপাশি, রাজ্যকেও সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করছেন বিজেপি-র অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই।