ফাইল চিত্র
দাবি উঠছিলই। শেষ পর্যন্ত বর্ধমান শহরে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলাশাসক বিজয় ভারতীর জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আজ, বুধবার থেকে সাত দিনের জন্য বর্ধমান শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডে সম্পূর্ণ ‘লকডাউন’ করা হচ্ছে। এর মধ্যে করোনা রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসা শহরের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের ২৮ জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী সোমবারই বলেছিলেন, ‘‘বর্ধমান শহরে সংক্রমণ বাড়ছে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। সম্পূর্ণ লকডাউন করার চিন্তাভাবনা চলছে।’’ এর পরেই এ দিন ‘লকডাউন’-এর সিদ্ধান্ত জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই সাত দিন শহরে অত্যাবশ্যক জিনিসপত্রের দোকান ছাড়া, অন্য সমস্ত দোকানপাট, অফিস-কাছারি ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। শহর জুড়ে কড়া নজরদারি চালানো হবে।
এ দিন সকালেই সাত দিন শহর ‘লকডাউন’ করার দাবিতে ‘বর্ধমান ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতি’র তরফে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সমিতির সম্পাদক বিশ্বেশ্বর চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে ‘লকডাউন’ একমাত্র ভরসা। তাই আমরা সাত দিন কড়া ‘লকডাউন’ চাইছি। বর্ধমানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও লকডাউনের দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে। ওই সংস্থার সম্পাদক দেবজিৎ সিংহও দাবি করেন, ‘‘সংক্রমণ বাড়ছে। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা লকডাউনের আবেদন করছি।’’
এরই মধ্যে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) রজত নন্দ। সোমবার বিকেলে বর্ধমান শহরের কালীবাজারের আমতলা এলাকার ওই বাসিন্দার করোনা-রিপোর্ট 'পজ়িটিভ' আসে। তার আগে দুপুরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের 'সারি' ওয়ার্ডে তাঁর মৃত্যু হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, তাঁর বাড়ির বেশ কয়েকজনের মধ্যে উপসর্গ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই প্রৌঢ় কয়েকদিন ধরে জ্বর-সর্দিতে ভুগছিলেন। চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। রবিবার রাতে হঠাৎ শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ নিয়ে জেলায় তৃতীয় করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হল।
শহরে সম্পূর্ণ ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ায় মাধ্যমিকের মার্কশিট বিলি নিয়ে চিন্তা তৈরি হয়েছে। আজ, বুধবার থেকেই স্কুলে মার্কশিট দেওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন শহরের পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) হুমায়ুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কী করা যায়, আলোচনা চলছে।’’