— প্রতীকী চিত্র।
আবাস প্রকল্পের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার রাতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রতিটি ব্লকে ও পঞ্চায়েতেও ওই তালিকা টাঙানোর কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশ, খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামসভা করতে হবে, কোনও অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখে বিডিওরা রিপোর্ট করবেন। এ ছাড়াও ব্লক, মহকুমা ও জেলায় অভিযোগ-বাক্স রয়েছে, কন্ট্রোল রুমেও ফোন করে অভিযোগ করা যেতে পারে। সব অভিযোগের তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে জেলা। ওই দু’টি রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৪ ডিসেম্বর জেলাস্তরে বৈঠক করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে।
জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, “বাংলার বাড়ি প্রকল্পের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। কোনও অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বুধবারই বৈঠক করে জেলাশাসক কেতুগ্রাম ১, মেমারি ১, ভাতার, রায়না ও খণ্ডঘোষ ব্লক নিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন সংশ্লিষ্ট বিডিওদের। তালিকা প্রকাশের পরেই ওই সব ব্লক থেকে অভিযোগ জমা পড়তে শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলাস্তর থেকে তালিকা চূড়ান্ত করার পরে রাজ্যস্তরে অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি হবে। তার ভিত্তিতেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে উপভোক্তারা প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে পাবেন। বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্য সরকার মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেবে। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি নাম রয়েছে জামালপুর (১০,৮২০ জন), বর্ধমান ১ (৯,৭৩৪ জন) ও ভাতার (৯,৪৭৪ জন) ব্লকে। সমীক্ষায় সবচেয়ে বেশি আবেদনকারীর নাম বাদ গিয়েছে কেতুগ্রাম ১ (৩২৩৬ জন), ভাতার (৩১৯৬ জন) ও বর্ধমান ১ (২৮৫৮ জন) ব্লক থেকে। জেলার গড়ের চেয়ে ৬৮টি পঞ্চায়েতে ‘যোগ্য’ উপভোক্তা বেশি রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬০৭টি বাড়ি সমীক্ষার আওতায় ছিল। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৯৮টি পরিবার আর্থিক অনুদান পাওয়ার ‘যোগ্য’ বলে বিবেচিত হয়। যোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি ৩৫,৯৯৩টি বাড়ি। এ ছাড়াও ‘অনুদান নেব না’ বলে লিখে দিয়েছেন বা অন্য কোনও কারণে তালিকায় নাম আসেনি ৬১২৯ জনের। এর বাইরে ৭৪৮৭ জনের আবেদনের ভবিষ্যৎ এখনও ঠিক করতে পারেনি প্রশাসন। প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, কেন্দ্রের ‘আবাস প্লাস’ সমীক্ষায় অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ৫৫,১৬৮ জনের মধ্যে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে যোগ্য হয়েছে ৪৬,০৩৩টি। আবাস-প্রকল্পের স্থায়ী তালিকায় থাকা ৭২,১২২ জনের মধ্যে ৫৬,৩৬৭ জনের নাম বর্তমান তালিকায় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাড়ির দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে প্রতিদিন চিঠি আসে। সেখানে ১০,৫৯৭ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৬০২৪ জনের নাম আছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ৯৯৬টি বাড়ি সমীক্ষার পরে ৯০২টি বাড়িকে তালিকায় রাখা হয়েছে।
তালিকা প্রকাশের পরেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মির্জা আখতার আলির দাবি, “শুধু ওয়েবসাইটে দিলে হবে না, পঞ্চায়েতে তালিকা টাঙাতে হবে। দুর্নীতি রয়েছে বলেই তালিকা টাঙানোর সাহস পাচ্ছে না।” তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “প্রশাসন স্বচ্ছ্ব বলেই ওয়েবসাইটে তালিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে তালিকা টাঙানো হচ্ছে।”