গরুর গাড়ির ধাক্কায় একটি মোটরবাইকের টুলবক্স ভেঙে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ। সেই বিবাদের জেরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে কেতুগ্রামের বেরুগ্রামে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নুর ইসলাম শেখ (৪২)। তাঁর বাড়ি বেরুগ্রামেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বেরুগ্রাম লাগোয়া কুলুটের বাসিন্দা ভুলু শেখের মোটরবাইক দাঁড় করানো ছিল বেরুগ্রামে। সেই বাইকে পিছন থেকে গরুর গাড়ি নিয়ে ধাক্কা মারেন ধানু শেখ নামে বেরুগ্রামের এক বাসিন্দা। ধাক্কায় টুলবক্স ভেঙে যাওয়ায় তার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয় ধানুকে। সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যই বুধবার বেরুগ্রাম ক্যানালপাড়ে জড়ো হওয়ার কথা ছিল দু’তরফের। সেই মতো ক্যানালপাড় লাগোয়া চায়ের দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে বসেছিলেন নুর ইসলাম ও ধানু।
নুরের পরিবারের অভিযোগ, হঠাৎই কুলুট গ্রামের তৃণমূল নেতা তথা বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য খোকন কাজি দলবল নিয়ে সেখানে চড়াও হয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন ধানুর কাছে। সেই নিয়ে দু’তরফে ফের বচসা বাধে। রড, লাঠি ও বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় নুরকে। মাথা ফাটে নুরের সঙ্গী শাজাহানের। গুরুতর আহত নুরকে প্রথমে কান্দরা ব্লক হাসপাতাল এবং পরে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানেই মারা যান নুর।
নুরের ভাই মতন শেখের অভিযোগ, ‘‘বাঁশ দিয়ে পেটানোর পরে মুখে রিভলভারের গুঁতো মারে দুষ্কৃতীরা। ভাই নিরীহ ছেলে। দু’পক্ষের মিটমাট করতে গিয়েছিল। আর মাঝখান থেকে ওরা ভাইকেই মেরে ফেলল!’’ নিহতের স্ত্রী নসুবা বিবি বলেন, ‘‘বিকেলে চা খেতে যাচ্ছে বলে বেরিয়েছিল। সন্ধ্যায় মারধরের খবর পেলাম। আমার দুই ছেলে-মেয়ে অনাথ হয়ে গেল।’’
এ দিন হাসপাতাল চত্বরে নুর ইসলামের মাসতুতো ভাই হাসিবুল শেখ দাবি করেন, খোকনের নেতৃত্বে পরিকল্পিত ভাবেই এই হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার খোকন-সহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মারধর ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের আর এক ভাই তাজিরুল শেখ। খোকন এবং অন্যতম অভিযুক্ত এনাই শেখকে রাতেই গ্রেফতার করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বকুল শেখের অবশ্য দাবি, ‘‘খোকন ঘটনাস্থলে থাকলেও মারামারিতে যুক্ত নয় বলেই শুনেছি। ও দোষী কিনা, বিচার হলেই জানা যাবে।’’