২১-এ ভোগান্তি জেলার নানা প্রান্তে

কাঁকসার এগারো মাইল বাসস্ট্যান্ড। বাসের দেখা প্রায় নেই। ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়লেন স্থানীয় বাসিন্দা অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়।— ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে দিনভর এমনই নানা টুকরো টুকরো ‘ভোগান্তি’র ছবি দেখা গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০২:০১
Share:

দুর্ভোগ: যানজট এড়াতে দু’নম্বর জাতীয় সড়কের এমএএমসি ব্রিজ লাগোয়া এলাকায় ‘নো-এন্ট্রি’। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র

কলকাতাগামী অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস। সংরক্ষিত কামরা, ‘বি-টু’। সেখানে ঢুকেই বসে পড়লেন কর্মী-সমর্থকেরা। সংরক্ষণ করা যাত্রীদের সঙ্গে খানিক বচসাও হল তা নিয়ে।

Advertisement

দৃশ্য দুই: কাঁকসার এগারো মাইল বাসস্ট্যান্ড। বাসের দেখা প্রায় নেই। ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়লেন স্থানীয় বাসিন্দা অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়।— ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে দিনভর এমনই নানা টুকরো টুকরো ‘ভোগান্তি’র ছবি দেখা গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানে।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শিল্পাঞ্চল তো বটেই, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া থেকেও বহু তৃণমূল নেতা-কর্মী আসানসোল স্টেশন থেকে নানা ট্রেনে করে কলকাতা রওনা হন। পঞ্জাব মেল, বিভূতি, দুন, আনন্দবিহার এক্সপ্রেসে তিল ধরানোর জায়গা ছিল না। শুক্রবার সকালে অগ্নিবীণী এক্সপ্রেস সংরক্ষিত কামরায় ‘সিটে বসা’ নিয়ে গোলমাল বাধে তৃণমূল কর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে। রেল নিরাপত্তা বাহিনী ও রেল পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দেয়। যদিও তৃণমূলের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘সাধারণ যাত্রীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল কর্মীদের। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

গত তিন দিন ধরেই আসানসোল শিল্পাঞ্চলে বাস ও মিনিবাস ধর্মঘট চলছে। তার মধ্যে আবার অনেকে বাস রিজার্ভ করে কলকাতায় যান। ফলে দুর্ভোগ আরও বাড়ে নিত্যযাত্রীদের। সমাবেশে যোগদানকারীদের সাহায্যের জন্য আসানসোল রেল স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূল ‘যাত্রী সহায়তা কেন্দ্র’ খোলে।

ভোগান্তির চিত্র দেখা গিয়েছে দুর্গাপুর, কাঁকসাতেও। অযোধ্যা গ্রামের শিশির মণ্ডল জানান, লোকাল বাসে চেপে দুর্গাপুরে আসতে হয়েছে। এক জন আবার জানান, ট্রেনে ব্যাপক ভিড় থাকায় কলকাতা যেতেই পারেননি তিনি।

এ ছাড়া বহু বাস রিজার্ভ করা হয়। ফলে দুর্গাপুর থেকে বহু রুটের দূরপাল্লার বাস এ দিন চলেনি, বা চললেও তার সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। অনিল পাসোয়ান নামে এক জন জানান, তিনি সকাল দশটায় ট্রেনে করে ধানবাদ থেকে এসে পৌঁছান। বোলপুর যাবেন। ঘণ্টা খানেক দাঁড়িয়েও বাস না মেলায় ট্যাক্সি ভাড়া করবেন বলে জানান তিনি। পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক দিয়ে আসানসোলগামী বেশির ভাগ বাসই চলেনি। সরকারি বাস থাকলেও, সেগুলি সব স্টপেজে না দাঁড়ানোয় সমস্যায় পড়তে হয় কাঁকসার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের।

যাতায়াতের সুবিধার জন্য কাঁকসার বসুধা মোড়, চারের মাইল, দু’নম্বর জাতীয় সড়কের বিরুডিহা, বুদবুদে নো-এন্ট্রি রাখা হয়। এর জেরেও বেশ কিছু ক্ষণ যানজট হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান। মানুষের ভোগান্তি নিয়ে সরব হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘শুক্রবার কাজের দিন। সরকারি উদ্যোগে গোটা পরিবহণ ব্যবস্থা ছিনতাই করে জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়া হল। বাসের ছাদে মানুষ যাচ্ছেন। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। শহিদ দিবস তো ছুটির দিনেও হতে পারে।’’ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘শহিদ দিবস ও ভাবে নির্দিষ্ট দিন মেনে হয় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement