বিজেপি নেতাদের সাহায্য নিতে গররাজি শিশুর পরিবার। নিজস্ব চিত্র
শিশু বদলের কথা প্রাথমিক ভাবে অস্বীকার করলেও শেষে তদন্ত কমিটি গড়ল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবারই মাধবডিহির লোহাই গ্রামের দম্পতি কালীরাম খাঁ ও মধুমিতা খাঁ অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের শিশুপুত্রের বদলে একটি মৃত শিশুকে দেওয়া হচ্ছে। দু’জনের কোনও মিল নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবন ও নবান্ন পর্যন্তও গড়ায়। তারপরেই ওই সিদ্ধান্ত। শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার বসাক বলেন, “শিশু বদলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।” পাঁচ জনের এই কমিটির শীর্ষে রয়েছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং সুপার।
এ দিন হাসপাতালে গিয়ে ঘটনাটি জানেন জেলার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পরে তিনি বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশু বদলের ঘটনা মানছেন না। তবুও তাঁরা শিশুটির মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রেখেছেন। প্রয়োজনে পুলিশের মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করানো হবে।”
এ দিকে মাধবডিহির ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়ে বিজেপি। দুপুরে বিজেপি নেতাদের মেডিক্যাল কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুর পরিজনদের কাছে গিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা আপনাদের জন্য লড়াই করছি। শিশু বদলের খবর পেয়েই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। আপনাদের সঙ্গে আমরাও অধ্যক্ষের কাছে তদন্ত চাইব।’ এরপরেই কার্যত তাঁদের দিকে তেড়ে যান শিশুর পরিজনেরা। বিজেপি নেতা প্রবাল রায়, শ্যামল রায়দের সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায়। শিশুটির জ্যাঠামশাই চাঁদু খাঁ হাতজোড় করে বিজেপি নেতাদের বলেন, “আমরা কোনও রাজনীতি চাই না। আপনারা ফিরে যান।” বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে বিজেপি নেতারা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যান। পরে যদিও ওই নেতারা দাবি করেন, “আমাদের কেউ ক্ষোভ দেখায়নি। ওই পরিবারের হয়ে আমরা তদন্ত চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথমে শিশু বিভাগের ব্যাখা নেওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যার পর নবান্ন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা বারবার খোঁজ নিতে শুরু করেন। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মতোই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ দিন শিশুর পরিজনরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে ডিএনএ টেস্টের দাবি জানান। মধুমিতাদেবী বলেন, “আমার ছেলে বেঁচে রয়েছে। আমি তার মুখ দেখতে চাই। আমার কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”