কাটোয়া দুর্গাদাসী চৌধুরানি (ডিডিসি) বালিকা বিদ্যালয়। —ছবি সংগৃহীত।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কাটোয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও করণিককে জিজ্ঞাসাবাদে ডাকল সিবিআই। সূত্রের খবর, কাটোয়া দুর্গাদাসী চৌধুরানি (ডিডিসি) বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা সরকারকে কয়েক দিন আগে ডেকেছিল সিবিআই। সেইমতো সোমবার সকালে কলকাতায় সিবিআই দফতরে তিনি হাজিরা দিতে যান বলে খবর। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, প্রায় চার ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর পরে ওই স্কুলের করণিক তথা কাটোয়া পুরসভার সদস্য তৃণমূলের বিজন সাহাকে তলব করা হয়। এ দিনই সন্ধ্যায় তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে খবর।
এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই স্কুলের ছাত্রী রাজ্যের মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছিল। এ বার নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের তলবের বিষয়টি জানাজানি হতে ফের কাটোয়ায় চর্চার বিষয় হয়েছে স্কুলটি। স্কুলের তরফে দাবি, বিভ্রান্তিমূলক নানা প্রচার চলছে, যা ঠিক নয়।
স্কুলের একটি সূত্রের দাবি, জয়রামবাটীর এক জনকে নিয়োগের বিষয়ে চিঠি এসেছিল ডিডিসি গার্লস স্কুলে। শিক্ষা দফতর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সে সংক্রান্ত ই-মেলে ওই চাকরিপ্রার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজির শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগের কথা বলা হয়। কিন্তু কোনও ‘সুপারিশ চিঠি’ আসেনি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এমনকী, সে সময়ে স্কুলে ইংরেজির শিক্ষিকা নেওয়ার কোনও পদও খালি ছিল না। ওই চাকরিপ্রার্থীও স্কুলে এসে যোগাযোগ করেননি। তার পরে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। এরই মধ্যে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলা চলাকালীন ওই চাকরিপ্রার্থী বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বলে জেনেছে স্কুল। তার পরেই সিবিআইয়ের তরফে তলব এসেছে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ জুলাই কাটোয়া মহকুমা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যম দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ১৯ জুলাই প্রথম ডেকেছিল সিবিআই। কিন্তু সে দিন তিনি যেতে পারেননি। এ দিন দ্বিতীয় বার ডাকে তিনি সাড়া দেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সকালে স্বামীকে নিয়ে কলকাতা রওনা হন তিনি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তলব করা হয় স্কুলের প্রধান করণিক তথা কাটোয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-সদস্য বিজনকে।
বিজনের দাবি, ‘‘এ দিন দুপুরে সিবিআই থেকে আচমকা আমাকে ই-মেল করে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়েছে। আমার নামের পাশে আবার জাতীয় ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক লেখা রয়েছে। সিবিআই পুরোপুরি বিভ্রান্তিমূলক আচরণ করছে। স্কুলের কাজে ছিলাম। দ্রুত বেরিয়ে যেতে হচ্ছে। এটা হয়রান করা ছাড়া আর কিছুই নয়।’’
বিকেলে ফোনে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই চাকরিপ্রার্থী নিয়োগপত্র পেয়েও কেন স্কুলে যোগ দেননি, সে বিষয়ে সিবিআই জানতে চেয়েছে। কিন্তু ওই চাকরিপ্রার্থী আমাদের স্কুলে সশরীরে কোনও দিন আসেননি বা যোগাযোগ করেননি। সে কথাই সিবিআইকে জানিয়েছি।’’ কাটোয়া মহকুমার স্কুল পরিদর্শক অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’