ফাইল চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) অতিথি নিবাসে সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলেন বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাস ও বিধায়কের ‘ঘনিষ্ঠ’, বর্ধমান আদালতের আইনজীবী উদয় কোনার। ফেরার পরে খোকন জানান, ২ মে কেন দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেছিলেন তিনি, তা জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। ভোট পরবর্তী হিংসার কোনও অভিযোগও মানেননি তিনি।
আউশগ্রাম ১ ব্লকের গুসকরা ২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়কে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার মামলায় আগামী রবিবার তলব করেছে সিবিআই। বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁর মোবাইলে নোটিস পাঠানো হয়। তাপস বলেন, ‘‘সিবিআই ঠিক কী কারণে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছে জানি না। তবে বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এলাকায় কোনও গোলমাল ঘটেনি।’’
গত সোমবার এনআইটি-তে আউশগ্রাম ২ ব্লক সভাপতি আহমদ শামস তাবরিজ ওরফে অরূপ মির্ধা-সহ বীরভূমের ১০ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁরা দাবি করেন, ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে তাঁদের ডাকা হয়েছে। এ ছাড়া, ‘কেষ্টদা’র সঙ্গে কখন, কী কথা হয়েছে, সেটাও জানতে চেয়েছিলেন প্রশ্নকর্তারা। পূর্ব বর্ধমানেও অনুব্রতর ‘কাছের লোক’ বলেই পরিচিত খোকন ও আইনজীবী উদয়। এ দিন খোকন জানান, সিবিআই নোটিস পাঠায়নি তাঁকে। এক মহিলা ফোন করেছিলেন। প্রথমে শুক্রবার সিবিআইয়ের দুর্গাপুরের অফিসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু শুক্রবার যেতে পারবেন না জানানোয়, বৃহস্পতিবার যেতে বলা হয় তাঁকে।
সিবিআই সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০-৪০ নাগাদ এনআইটিতে ঢোকেন খোকন। এক ঘণ্টা ১০ মিনিট ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি, মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। খোকন বলেন, ‘‘ইলামবাজারের একটি ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ওই দিন সন্ধ্যা ৭-২০ নাগাদ কেন কেষ্টদাকে ফোন করেছিলাম, তা জানতে চাওয়া হয়। আমি জানিয়েছি, ভোটে জেতার পরে শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা তৃণমূলের সংগঠন করছে, দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাঁদের পিছনে সিবিআই লেলিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। কোথায় বর্ধমান দক্ষিণ আর কোথায় ইলামবাজার!’’ উদয়ও বলেন, ‘‘ডাক পেয়ে আমিও গিয়েছিলাম। আমিও ফোনে ভোটে জেতার শুভেচ্ছা জানিয়েছি। যাঁকে ফোন করেছিলাম তিনি আমার মক্কেল। মক্কেলকে কি ফোন করতে পারব না!’’
সিবিআই সূত্রে জানা যায়, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান জেলার ৫৬ জনকে ডাকা হয়েছে। যাঁরা ২মে অনুব্রতকে ফোন করেছিলেন।
তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোট। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে দিয়ে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি (বর্ধমান সদর) সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘তৃণমূল বিরোধীদের উপরে যে হিংসা চালিয়েছে ও চালাচ্ছে, এ সবতারই ফল। সিবিআই-এর উপরে রাজ্যবাসীর আস্থা রয়েছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।