এমন নানা পোস্টে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
পুরভোটের জন্য সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। এখনও দিন ঘোষণা হয়নি। তবে তার মধ্যেই পুরপ্রধান শিশির মণ্ডলের প্রচার নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হল দাঁইহাটে। তাঁর ফোন নম্বর জানিয়ে কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে পুরপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগের বার্তা দিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রচার চালানো হচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এত দিন নানা সমস্যা জানিয়েও সমাধান মিলত না। ভোট এসে পড়ায় শাসকদল ও নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেই পুরপ্রধান এই রাস্তা নিয়েছেন বলে তাদের দাবি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আপনার কথা, আমি শ্রোতা’ লেখা ও পুরপ্রধানের ছবি দেওয়া ওই পোস্টে সরকারি নানা প্রকল্পের প্রচার করা হয়েছে। সেই সঙ্গেই পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ বা সমস্যার ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে আর্জি জানিয়েছেন পুরপ্রধান। সেই পোস্ট দেখে তৃণমূলেরই একটি অংশের নেতা-কর্মীদের দাবি, রাজ্যের নানা প্রকল্পের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখতেই তাঁরা অভ্যস্ত। সেখানে পুরপ্রধান নিজের ছবি বসিয়েছেন। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ছবির বদলে আমার ছবি দলীয় কর্মীরা না বুঝেই বসিয়ে দিয়েছেন। এটা ঠিক হয়নি।’’
বিরোধী দলের নেতাদের অভিযোগ, দাঁইহাটে নিকাশি, পানীয় জল, মিউটেশন-সহ নানা ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়ে পুরসভায় লিখিত আবেদন-নিবেদন করা হলেও সুরাহা হয়নি। বাসিন্দাদের অনেকে পুরসভায় বারবার গেলেও ফল পাননি বলে অভিযোগ। ‘সবার জন্য গৃহ’ প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে বহু অভিযোগ করেও লাভ যায়নি। তাই এখন পুরপ্রধানের নম্বর প্রচার করে অভিযোগ জানানোর আর্জি নেহাতই ভোটের আগে ‘লোক দেখানো’ প্রচার বলে দাবি বিরোধীদের। শহরের সিপিএম কাউন্সিলর বিদ্যুৎবরণ ভক্তের অভিযোগ, ‘‘ভোট এগিয়ে আসতেই পুরপ্রধান মানুষকে বোকা বানাতে চাইছেন। শহরবাসী ভোটে ওঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন।’’
বিষয়টি নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে শাসক দলের অন্দরেও। দাঁইহাট শহর তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জিত সাহার বক্তব্য, ‘‘পুরপ্রধান অতি সক্রিয় হয়ে নিজের নম্বর জানিয়ে শহরবাসীর কাছে সমস্যা শুনতে চাইছেন, এটা ভাল উদ্যোগ। তবে, জনপ্রিয় প্রকল্পগুলির মাঝে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখতেই অভ্যস্ত। তাতেও দেখছি পরিবর্তন এসেছে। কেন পুরপ্রধান এমন করলেন, তিনিই ভাল বলতে পারবেন।’’
পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, ‘‘ মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করি। নাগরিকেরা যাতে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, সে জন্যই ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। তবে আমার ছবি দেওয়া পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তুলে নিতে বলা হয়েছে কর্মীদের।’’