কলকাতা হাই কোর্ট। নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জে মোহন্ত অস্থল ভেঙে ফেলা নিয়ে হেরিটেজ ধ্বংসের মামলায় বর্ধমান হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ সম্পর্কিত রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ সরকারি কি না, তা রাজ্য সরকারকে জানাতে বলা হয়েছে। শুধু বর্ধমানের হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ নিয়েই নয়, রাজ্যে হেরিটেজ নির্মাণের সীমানায় কোথায় কোথায় এ ধরণের হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ চলছে, সেই সম্পর্কিত রিপোর্টও পেশ করতে বলা হয়েছে সরকারকে। সেগুলি সরকারি কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। কলেজগুলি কবে থেকে চালু হয়েছে, তা সরকারকে রিপোর্ট আকারে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজগুলি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কি না, তা-ও জানানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি হেরিটেজ স্থানে পুলিশ পিকেট চালু থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
কয়েক মাস আগে মোহন্ত অস্থলের মন্দির ভাঙাভাঙি শুরু হয়। সেখানেই রয়েছে হোমিওপ্যাথি কলেজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ হেরিটেজ ধ্বংসে বাধা দেয়। ভাঙাভাঙিতে জড়িয়ে পড়ে একটি ট্রাস্টি বোর্ডের নাম। দাবি, সেই বোর্ডে শাসকদলের এক প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন। হেরিটেজ ধ্বংস নিয়ে হোমিওপ্যাথি কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানান। কিন্তু, প্রশাসন আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব থাকে। হেরিটেজ ধ্বংস রুখতে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি প্রশাসন। বাধ্য হয়ে হোমিওপ্যাথি কলেজ কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টে মামলা করে। হাই কোর্ট এ ব্যাপারে জেলাশাসক, পুরসভা ও হেরিটেজ কমিশনের রিপোর্ট তলব করে। সেই রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়েছে। হোমিওপ্যাথি কলেজের আইনজীবী উত্তীয় রায় ও অর্ণব মণ্ডল বলেন, ‘‘হেরিটেজ কমিশন রিপোর্টে জানিয়েছে, স্থানীয় লোকজনের গন্ডগোলের কারণে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি। পুরসভা ঝড়ে হেরিটেজ ভবন ভেঙে পড়ে বলে রিপোর্ট দিয়েছে। তিন ধরণের রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়েছে। হাই কোর্ট হেরিটেজ কমিশনকে ঐতিহ্য নির্মাণ রক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে বলেছে। পুলিশ পিকেট যথারীতি চলবে। ট্রাস্টের তরফে অবৈধ নির্মাণের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনও নির্মাণ করবে না বলে ট্রাস্ট আন্ডারটেকিং দিয়েছে।