বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
শহরে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ায় উদ্যোগী হলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সিএবি-তে গিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে সে প্রস্তাবের চিঠি দিয়ে এসেছেন বলে জানান উপাচার্য নিমাই সাহা। ওই চিঠিতে আধুনিক অ্যাকাডেমি তৈরির জন্য প্রায় চার কোটি টাকা সাহায্যের আর্জি জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি বিসিসিআই-এর কাছে পাঠানো হবে বলে আশ্বাস সিএবি কর্তৃপক্ষের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের দাবি, সিএবি-র পরিচালনায় বছরভর বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্লাব স্তরে নানা প্রতিযোগিতা হয়। কিন্তু সিএবি পরিচালিত অ্যাকাডেমি রয়েছে মাত্র দু’টি— কল্যাণী ও খড়্গপুরে। বর্ধমান শহরে মাঠের অভাবে প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তারা হাপিত্যেশ করেন। নতুন খেলোয়াড় উঠে আসছে না দাবি করে বিভিন্ন ক্লাবের কর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরাও আক্ষেপ করেন।
সম্প্রতি সিএবি পরিচালিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় কল্যাণীকে হারিয়ে দু’দশক পরে ট্রফি জিতেছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। সেই উদাহরণ দিয়ে উপাচার্য দাবি করেন, “মোহনবাগান মাঠের পাশেই আর একটি মাঠ তৈরি হচ্ছে। মোহনবাগান মাঠে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি হলে সিএবি-র খেলাগুলি সরাসরি পরিচালনা করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে খেলার মানও উন্নতি হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, মোহনবাগান মাঠটি ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক মাপে তৈরি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খেলার মাঠের সঙ্গে ‘স্পোর্টস হস্টেল’ তৈরি করা হচ্ছে। একটি হস্টেলের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর একটি তৈরির জন্যে রাজ্য সরকার ৮৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। সেটিও দ্রুত তৈরি হওয়ার পথে। দু’টি হস্টেল তৈরি হলে ১৬টি দলের খেলোয়াড়, কোচ, ম্যানেজার-সহ প্রায় তিনশো জনের থাকার পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। সিএবি-তে সিনিয়র, জুনিয়র ও মহিলা বিভাগ মিলিয়ে বাংলার ক্রিকেটে সাতটি বিভাগ রয়েছে। কল্যাণী ও খড়্গপুরের অ্যাকাডেমিতে শিবির করলে সবাইকে এক সঙ্গে জায়গা দেওয়া যায় না। কিন্তু বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমি হলে সিএবি সহজেই আবাসিক শিবির করতে পারবে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগ জানায়, মোহনবাগান মাঠের পাশের মাঠটি ফুটবলের জন্য গড়ে তোলা হবে। ওই চত্বরেই তৈরি হচ্ছে সুইমিং পুল ও ইন্ডোর স্টেডিয়াম। সেখানে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ভলিবলের কোর্ট থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া আধিকারিক সুরজিৎ নন্দী বলেন, ‘‘শিবির চলার সময়ে অন্য নানা খেলাধুলোর সুযোগের ব্যবস্থাও থাকছে। আধুনিক মাল্টিজিম গড়া হচ্ছে। সিএবি পরিচালিত ক্লাব বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের প্রতিযোগিতাগুলি বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠে করা যেতে পারে।’’
সিএবি-র একটি সূত্রে জানা যায়, এ রাজ্যে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সিএবি-র যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি চার একর জায়গা দিতে পারেন, তবে প্রস্তাবটি বিসিসিআই-এর কাছে পাঠিয়ে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি গড়ার চেষ্টা করা হবে।’’