দুঃস্থদের খিদে মেটাতে ‘রুটি ব্যাঙ্ক’ জামুড়িয়ায়

রাতে খাবারের সন্ধানে অনেককেই পথেঘাটে ঘুরতে দেখতেন তাঁরা। সেই থেকেই পরিকল্পনাটা মাথায় আসে জামুড়িয়ার কয়েক জনের। তার পরে থেকে প্রতি সন্ধ্যায় তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে রুটি সংগ্রহ করছেন। তার পরে তা বিলি করা হয় ২২টি বাড়িতে। প্রতিটি বাড়িতে সদস্য সংখ্যা এক বা দু’জন। এই উদ্যোগের পোশাকি নাম, ‘রুটি ব্যাঙ্ক’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৭
Share:

বাড়ি থেকে রুটি সংগ্রহ। জামুড়িয়ায়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ

রাতে খাবারের সন্ধানে অনেককেই পথেঘাটে ঘুরতে দেখতেন তাঁরা। সেই থেকেই পরিকল্পনাটা মাথায় আসে জামুড়িয়ার কয়েক জনের। তার পরে থেকে প্রতি সন্ধ্যায় তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে রুটি সংগ্রহ করছেন। তার পরে তা বিলি করা হয় ২২টি বাড়িতে। প্রতিটি বাড়িতে সদস্য সংখ্যা এক বা দু’জন। এই উদ্যোগের পোশাকি নাম, ‘রুটি ব্যাঙ্ক’।

Advertisement

এই সামগ্রিক উদ্যোগে মূল ভূমিকায় রয়েছেন জামুড়িয়া হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রোহনরাম রজক, শিবজি সিংহ, মানিক ভাণ্ডারী, গোপাল দাস, সুরেশ সাউ ও শুভম রাউত। এঁদের কেউ শিক্ষক, কেউ বা অন্য কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত। জামুড়িয়ার ৩ নম্বর এলাকা, নন্ডীগ্রাম, রেললাইন পাড়া, নন্ডী রোড প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দা এঁরা।

রোহনবাবু জানান, চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি ও শিবজিবাবু নানা জনের কাছ থেকে শোনেন কয়েক জন মানুষ, যাঁরা খাবার সংগ্রহ করতে সমস্যায় পড়ছেন। তখনই নেওয়া হয় এই পরিকল্পনা। তাঁদের এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়ান শিবমন্দির মোড়ের একটি কাঠগোলার মালিক মহেশ সিংহ। ছেড়ে দেন, কাঠগোলার একটি বেঞ্চ। আপাতত সেই বেঞ্চই এই উদ্যোগের কার্যালয়।

Advertisement

পরিকল্পনা মতো প্রথম দিকে ঘনিষ্ঠ কিছু পরিবার থেকে সন্ধ্যায় দু’টি করে রুটি ও সব্জি সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। এর পরে রুটি দিতে আগ্রহী পরিবারের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ে। এই মুহূর্তে ৪০টি পরিবার তাঁদের পাশে আছে বলে জানান শিবজিবাবুরা। অনেক সময়ে কিছু পরিবার থেকে দু’টির বেশি রুটি বা মাছ-মাংসও মেলে বলে জানা গিয়েছে। রুটি, সব্জি সংগ্রহ করে ফি সন্ধ্যায় তা জড়ো করা হয় ওই বেঞ্চ-কার্যালয়ে। সেখান থেকে প্রতিটি বাড়ির জন্য সব্জি ও চারটি রুটি প্যাকেটে ভরা হয়। এর পরে সেই প্যাকেট হাতে এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত লোকজন পৌঁছে যান নন্ডীগ্রাম, জামুড়িয়াবাজার, দামোদরপুর, বাইপাস এলাকার ওই ২২টি বাড়িতে।

সমাজকর্মীরা জানান, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে অন্যতম চিন্তার বিষয় খাদ্য সুরক্ষা। সকলের মুখে খাবার দিতে সংখ্যায় কম হলেও দেশের নানা প্রান্তে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে নানা সংগঠনকে। মুম্বই, দিল্লি, কলকাতার মতো মহানগরে এই উদ্যোগ তো রয়েছেই। আসানসোলেও উদ্বৃত্ত খাবার সংগ্রহ করে তা অভুক্তদের মুখে তুলে দেওয়ার উদ্যোগও সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে। এ বার সেই তালিকায় নাম লেখাল জামুড়িয়াও।

তবে এখানেই থেমে থাকতে চান না শিবজিবাবুরা। তাঁরা জানান, চাহিদার কথা জানলে রুটি সংগ্রহের পরিমাণও বাড়ানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement