টিকিটের ‘কালোবাজার’, অন্য নামে ট্রেন-যাত্রা

টিকিটে যা নাম, যাত্রীর সচিত্র পরিচয়পত্রে সেই নাম নেই। সম্প্রতি এমনই কিছু ঘটনা সামনে এসেছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে। এর পরে অনলাইন টিকিটে প্রতারণার বিষয়টিও সামনে এসেছে বলে জানান রেলকর্তা ও আরপিএফের আধিকারিকেরা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

টিকিটে যা নাম, যাত্রীর সচিত্র পরিচয়পত্রে সেই নাম নেই। সম্প্রতি এমনই কিছু ঘটনা সামনে এসেছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে। এর পরে অনলাইন টিকিটে প্রতারণার বিষয়টিও সামনে এসেছে বলে জানান রেলকর্তা ও আরপিএফের আধিকারিকেরা।

Advertisement

আরপিএফের অপরাধ দমন শাখার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আসানসোল-মুম্বই এক্সপ্রেসে এক ব্যক্তির টিকিট পরীক্ষার সময়ে সন্দেহ হয় টিকিট পরীক্ষকের। কারণ, টিকিটে উল্লেখ করা নামের সঙ্গে যাত্রীর পরিচয়পত্রের নামের কোনও মিলই নেই। বিষয়টি ওই টিকিট পরীক্ষক আসানসোল আরপিএফের অপরাধ দমন শাখার নজরে আনেন। আসানসোল স্টেশনে ওই যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি শহরেরই হাটনরোড এলাকার এক ‘ট্রাভেল এজেন্টে’র কাছ থেকে টিকিট কিনেছিলেন। তার জন্য টিকিটের আসলে যা দাম, তার থেকে প্রায় পাঁচশো টাকা বেশি দিতে হয়েছে!

এর পরেই বিষয়টি রুখতে খোঁজখবর শুরু করেন আরপিএফ কর্তারা। অপরাধ দমন শাখার আধিকারিক বাসুকী নাথের নেতৃত্বে সম্প্রতি হাটন রোডের ওই ট্রাভেল এজেন্টের অফিসে অভিযান চালানো হয়। টিকিটের অবৈধ কারবারের অভিযোগে মহম্মদ মিরাজুল হক নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে প্রায় ২৪ হাজার টাকা মূল্যের ১১টি সংরক্ষিত টিকিটও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আরপিএফ কর্তাদের দাবি, মিরাজুল জেরায় তাঁদের কাছে জানিয়েছেন, এই কারবার তিনি প্রায় এক বছর ধরে করছেন।

Advertisement

কিন্তু কী ভাবে চলত এই কারবার? বাসুকী নাথ জানিয়েছেন, ধৃত ব্যক্তি একাধিক ভুয়ো ই-মেল আইডি তৈরি করে বিভিন্ন নামে সাধারণ ও তৎকালে টিকিট কেটে রাখতেন। তার পরে টিকিট পিছু ৫০০ টাকা বেশি দরে চলত টিকিট বিক্রি। সাধারণ ভাবে, এমন কারবারিরা এ ভাবেই ‘ব্যবসা’ চালায় বলে জানা গিয়েছে।

এই ঘটনা সামনে আসার পরে আরও জোরকদমে অভিযান শুরু করে আরপিএফ। আরপিএফের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র সিকিওরিটি কমিশনার অচ্যুতনন্দ ঝা জানান, নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে সীতারামপুর, জামতাড়া, অণ্ডাল, দেওঘর, মধুপুর, আসানসোল ও দুর্গাপুরের বেশ কয়েক জন ট্রাভেল এজেন্টের অফিসে হানা দেওয়া হয়। পাঁচ জনকে গ্রেফতার এবং প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা, নতুন-পুরনো মিলিয়ে ১৯৬টি সংরক্ষিত টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়।

এই পরিস্থিতিতে ধারাবাহিক অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছে আরপিএফ। সেই সঙ্গে অচ্যুতানন্দবাবু জানান, আইআরসিটিসি থেকে যে সব ট্রাভেল এজেন্ট নিয়মিত টিকিট কাটেন, তাঁদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। রেলের এক কর্তা জানান, টিকিটের এই কালোবাজারির অভিযোগ অনেক দিন ধরেই উঠেছিল। সাধারণ ভাবে মানুষের জরুরি যাতায়াতের প্রয়োজনকেই এই কারবারিরা কাজে লাগান। উৎসব বা বেড়াতে যাওয়ার সময়ে এই ‘কারবার’-এর পৌষ মাস বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement