নিজস্ব চিত্র।
আদিবাসীদের জন্য কোন কাজ করেনি বর্তমান শাসক দল। গৃহসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে এসে সোমবার এ ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে আদিবাসীদেরও ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করেছে তৃণমূল। নির্বাচনের আগে উন্নয়নের নামে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ককে পোক্ত করেছে তারা।
তাঁর দাবি, জঙ্গলমহলের উন্নয়ন হয়েছে বলে যে ঢাক পিটিয়ে বেড়াচ্ছে তৃণমূল, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের কোনও উন্নয়ন হয়নি। এর পরই খগেনের কটাক্ষ, তৃণমূলের এই লোকদেখানো কর্মকাণ্ড আদিবাসীরা বুঝে গিয়েছেন। তাই আদিবাসী প্রভাবিত এলাকা বিজেপির দিকে ঝুঁকে রয়েছে। বিজেপি সাংসদ বলেন, “অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৩ সালে আদিবাসীদের অলচিকি ভাষা অষ্টম তপশীলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাজপেয়ীর আমলেই আদিবাসীদের দীর্ঘ দিনের দাবি হিসাবে ২০০২ সালে ফরেস্ট অ্যাক্ট পাশ হয়।”
তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অলচিকি ভাষায় আদিবাসীদের শিক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও রাজ্যে সেই ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। অলচিকি ভাষায় শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতিও পালন করা হয়নি। এমনকি অলচিকি ভাষার স্রষ্টা পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর জন্মদিনেও তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয় না বলেও অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি সাংসদ।
বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যের নিন্দা করে পাল্টা আক্রমণ করেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি বলেন, “নিজেকে হিন্দু ধ্বজাধারীদের কাছে অর্থের বিনিমিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। এ বার সমগ্র আদিবাসী সমাজকে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন।” ২০০৩ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎকালীন বিজেপি সরকারের শরিক থাকাকালীন আন্দোলন করে অষ্টম তপশিলের অন্তর্ভুক্ত অলচিকি ভাষাকে করান বলে জানান দেবু টুডু।
তিনি আরও বলেন, “২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর আদিবাসী সমাজের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আগে তো জঙ্গলমহলে মানুষ খেতে পেতেন না। এখন তাঁদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের চাল, ১০০ দিনের কাজ, মেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করতে কন্যাশ্রীর প্রকল্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আদিবাসী সমাজের ছেলেমেয়েরা যাতে অলচিকি ভাষায় পড়াশোনা করতে পারেন সেই ব্যবস্থার পাশাপাশি এই ভাষার জন্য প্রায় ৫০০ শিক্ষিক নিয়োগ করতে চলেছে তৃনমূল সরকার।”