ইসিএল অফিসের সামনে অবস্থান বিজেপি কর্মীদের। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বেআইনি কয়লা কারবার বন্ধের দাবিতে ইসিএলের অফিসে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। সোমবার সালানপুর এরিয়া অফিসের সামনে এই বিক্ষোভের সঙ্গে রাস্তা অবরোধও করা হয়। লালাগঞ্জ রোড ঘণ্টা দেড়েক অবরুদ্ধ থাকে। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সকাল ১০টা থেকে বারাবনির লালগঞ্জে ইসিএলের ওই কার্যালয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি অভিযোগ করেন, বারাবনি ও সালানপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রমরমিয়ে অবৈধ কয়লার কারবার চলছে। তৃণমূলের মদতে ও ইসিএল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এই কারবার বেড়ে চলছে বলে তাঁর দাবি। লক্ষ্মণবাবুর হুঁশিয়ারি, ‘‘কয়লার অবৈধ কারবার বন্ধ না হলে আন্দোলন চলবে।’’
সকাল ১১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বসে পড়েন। লালগঞ্জ রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দু’দিকে গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। হঠাৎ অবরোধে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। পরিস্থিতি তেতে ওঠে। আসানসোল থেকে পুলিশের বড় বাহিনী পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ অবরোধ তোলে পুলিশ। পরে লক্ষ্মণবাবুর নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল সালানপুর এরিয়ার এজিএম জেপি সিংহের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি দেয়।
বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে এজিএমের বক্তব্য, ‘‘কয়লা চুরির খবর পেলেই সিআইএসএফ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায়। অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করে ডিপোয় জমা করা হয়।’’ তৃণমূলের বারাবনি ব্লক সভাপতি অসিত সিংহের পাল্টা দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের পর থেকে এলাকায় বিজেপি ছেড়ে অনেকে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। জনসমর্থন হারাচ্ছে বুঝতে পেরেই মিথ্যে অভিযোগ তুলে আমাদের দলের দুর্নাম করতে চাইছে ওরা।’’
সালানপুর এরিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে সালানপুর ও বারাবনি এলাকায় কয়েকবার অভিযান চালিয়ে প্রচুর অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত অভিযোগে বেশ কিছু সাইকেল এবং মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করা নয়, বেআইনি খাদানও ভরাট করা হচ্ছে। ১ ফেব্রুয়ারি নরসমুদা এলাকায় প্রায় ১২টি এ রকম খাদান বন্ধ করা হয়েছে। পুলিশেরও দাবি, ইসিএলের তরফে খবর দেওয়া হলেই অবৈধ কয়লা ধরপাকড়ে সিআইএসএফের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালানো হচ্ছে।