ক্ষোভের-আগুন: বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ পাণ্ডুয়া মোড়ে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
গণপিটুনিতে এক মৃৎশিল্পীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের উপপ্রধান-সহ ১৪ জনের নামে অভিযোগ করেছিল পরিবার। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত তপন পাল, তপন পাত্র, তাপস পাল, মহানন্দ পাল এবং মমতা পাত্রের বাড়ি কালনার পাথরঘাটা গ্রামেই। রবিবার তাঁদের কালনা আদালতে তোলা হলে প্রথম দু’জনের ন’দিনের পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরেই নিহত রবিন পালকে নিজেদের কর্মী দাবি করেছিল বিজেপি। রবিবার দু’জায়গায় বিক্ষোভও দেখান দলের নেতা-কর্মীরা। পরিবারেরও দাবি ছিল, বিজেপি করায় জোর করে তাঁর জমি দখল করে একশো দিনের কাজে নালা তৈরি করা হচ্ছিল। তাতেই আপত্তি জানান রবিনবাবু। কথা কাটাকাটির মাঝে রবিনবাবুর হাতে থাকা হাঁসুয়ার কোপে জখম হন স্থানীয় তৃণমূলের সহকারী বুথ সভাপতি বাদল পাত্র। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অন্য শ্রমিকেরা। অভিযোগ, বাঁশ, লাঠি, চেন দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় রবিনবাবুকে। মারধরের পরে স্থানীয় একটি মন্দিরে রাখা হয়। মেয়ে জল দিতে গেলে তাকেও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁকে। সেখানেই মারা যান ওই মৃৎশিল্পী।
এ দিন প্রথমে কালনা থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। দুপুরে বিজেপির জেলা সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষ, জেলা পর্যবেক্ষক সুবীর নাথ-সহ একটি প্রতিনিধি দল ওই বাড়িতে গিয়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন দীর্ঘ ক্ষণ। তাঁরা গ্রামে পৌঁছনোর আগেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পরে বিজেপি কর্মীরা পাণ্ডুয়া মোড়ে এসে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে কর্মসূচি।
কৃষ্ণবাবুর দাবি, ‘‘এখনও মূল অভিযুক্ত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গ্রেফতার হয়নি। যতদিন না উপপ্রধান গ্রেফতার হবে আন্দোলন থেকে সরবে না বিজেপি।’’ তাঁর আশ্বাস দল রবিনবাবুর পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। তবে বিজেপি লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেন জেলা পরিষদের সহ সভাপতি তথা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক। পাথরঘাটার ঘটনাটি অরাজনৈতিক। তবে বিজেপি যে ভাবে লাশ নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে তা নিন্দনীয়। এমন রাজনীতি মানুষ মেনে নেবেন না।’’