হুল্লোড়: কার্জন গেট চত্বরে জিটি রোডের উপরে হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহীরা। নিজস্ব চিত্র
শহরের গোলাপবাগ মোড়। দাঁড়িয়ে কয়েক জন পুলিশকর্মী। সাঁ করে বেরিয়ে গেল মোটরবাইক। আরোহীদের মাথায় নেই হেলমেট। পিছনে বসা আরোহী আবির উড়িয়ে চিৎকার করে উঠলেন, ‘হোলি হ্যায়।’—শুক্রবার বর্ধমান শহরের ‘মেজাজ’ ছিল এমনই। শহরবাসীর অভিযোগ, এমন অনিয়ম চললেও পুলিশ-প্রশাসনকে কোনও রকম ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি দিনভর।
অথচ, পুলিশের প্রস্তুতিতে কোনও খামতি ছিল না। দোল উৎসবের আগে বুধবার হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহীদের ‘সতর্ক’ করতে ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ। দেখা গিয়েছিল, বর্ধমান শহরের জিটি রোডের বীরহাটা মোড়, কার্জন গেট চত্বর, বীরহাটা মোড়ে বর্ধমানের ট্র্যাফিক ওসি চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিযান চালায় পুলিশ। হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহী দেখলেই তাঁদের দাঁড় করিয়ে লাল-নীল-সবুজ আবির মাখিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। সে দিন রং মেখেই গন্তব্যে রওনা দিতে হয় হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহীদের।
কিন্তু শুক্রবার উৎসবের দিন শহরের পথে ঘুরে দেখা গেল, এই কর্মসূচি প্রায় কোনও কাজেই আসেনি।
কী রকম? দৃশ্য এক: রেল স্টেশন চত্বর। এক দল যুবক-যুবতী মোটরবাইকে এলেন। সঙ্গে দেদার হৈ-হুল্লোড়। কারও মাথায় নেই হেলমেট।
দৃশ্য দুই: নবাবহাট। দেখা গেল, এক মোটরবাইকে আরোহীর সংখ্যা ন্যূনতন তিন জন। কোনওটাতে আবার চার জনও রয়েছেন। মুঠো মুঠো আবির উড়ল আকাশে। সঙ্গে গানের কলি। — শুধু এই দুই জায়গায় নয়, দিনভর জিটি রোডের নানা প্রান্তে দেখা গেল এই বাইক বাহিনীর ধুম।
একাধিক শহরবাসীর অভিজ্ঞতা, কার্জন গেট চত্বর-সহ নানা এলাকায় বাইকবাহিনীর ‘সরব উপস্থিতি’তে পথে চলাই দায় হয়ে পড়েছিল। সেই সঙ্গে শহরবাসীর ক্ষোভ, রাস্তায়, মোড়ে যথেষ্ট সংখ্যায় পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিল। কিন্তু ধরপাকড় বা জরিমানা, কোনওটাই করা হয়নি।
যদিও ডিএসপি (ট্র্যাফিক) প্রদীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘অবাধ্য মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য রুখতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে এ দিনও অভিযান চালানো হয়েছে। একটি মোটরবাইকে চার জন যাচ্ছিলেন, তাঁদের আটক করা হয়েছে। এ ছাড়াও মুখোশ পরা মোটরবাইক আরোহী ও বেশ কয়েক জন মদ্যপ আরোহীকেও আটক করে বর্ধমান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। চলেছে সচেতনতা প্রচারও।’’