‘এত দিন কার্ফু চললে মেয়েটার পড়ার কী হবে’

বর্ধমান শহরে বড়বাজারের একটি গলির ভিতর বস্ত্রবিপণী রয়েছে মুস্তানসর আলির। এলাকায় ‘নানা ভাই’ বলে পরিচিত তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৪
Share:

জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার প্রস্তাবের প্রতিবাদে সিপিএমের মিছিল কার্জন গেট চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

গোটা রাজ্য জুড়ে কার্ফু। রবিবার সকাল থেকেই পরিজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বর্ধমান শহরে থাকা জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা। সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাবের পর থেকে উদ্বেগ বেড়েছে তাঁদের। কেউ বলছেন, এ ভাবে সমস্যার সমাধান হয় না। কারও মনে হয়েছে, বহুজাতিক সংস্থাগুলি ব্যবসার সুযোগ পাবে এ বার। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিরও হাল ফিরতে পারে।
বর্ধমান শহরে বড়বাজারের একটি গলির ভিতর বস্ত্রবিপণী রয়েছে মুস্তানসর আলির। এলাকায় ‘নানা ভাই’ বলে পরিচিত তিনি। মুস্তানসর জানান, কাশ্মীরের শ্রীনগরের দায়রা আদালতের পাশেই তাঁর বাড়ি। সিকি শতাব্দী আগে সেখান থেকে শাল নিয়ে বর্ধমানে এসেছিলেন ব্যবসা করতে। তারপর থেকে বর্ধমানই তাঁর ঘরবাড়ি। এখন বছরে দু’বার শ্রীনগর যান। সেখান থেকে শীতের পোশাক নিয়ে আসেন। এ ছাড়াও কাশ্মীরের মহিলাদের তৈরি কিছু জামাকাপড় গরমকালেও বিক্রি করেন। এ দিন নিজের দোকানে বসে তিনি বলেন, “খুবই চিন্তার মধ্যে রয়েছি। বাড়ির সঙ্গে ফোনে বা ইন্টারনেটে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমাদের এখানে থাকা আত্মীয়স্বজনেরাও একই কথা বলছেন। কলকাতায় থাকা দোস্তরাও কাশ্মীরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।’’ শ্রীনগরের বাড়িতে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে রয়েছে তাঁর। মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। নানা ভাইয়ের চিন্তা, “৩৭০ ধারা, ৩৫ এ ধারা তুলে নেওয়া হলে জম্মু ও কাশ্মীরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী হবে বা কী হতে চলেছে, এখনই বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু মাসের পর মাস কার্ফু চললে মেয়েটার পড়াশোনার কী হবে?”
বিসি রোডের এক শাল ব্যবসায়ী আবার নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, “আমাদের রাজ্যে পর্যটন ব্যবসা ছিল আয়ের অন্যতম পথ। লাগাতার অশান্তির জন্যে সেই ব্যবসায় টান পড়েছিল। ৩৭০ ধারা বাতিল হলে অনেক বহুজাতিক সংস্থা কাশ্মীরে ব্যবসা বা শিল্প গড়তে উৎসাহী হবেন। আয়ের উৎস খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সবটাই নির্ভর করছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তার উপর।’’
শহরের দত্ত সেন্টারের দোতলায় দোকান রয়েছে লিয়াকত হাজারির। তাঁর পরিজনেরাও কাশ্মীরে রয়েছেন। তিনি বলেন, “কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। ওখানকার পরিস্থিতি না জেনে কিছু বলাটা ঠিক হবে না।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement