দলের পতাকা হাতে তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি ‘ভূমিপুত্র’কে প্রার্থী হিসাবে চেয়ে ফ্লেক্স-পোস্টার পড়েছিল এলাকায়। দীর্ঘদিন পরে এক সঙ্গে মিছিলে দেখা যায় ভাতারের দুই নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীকে। বুধবার বিকেলে ওই দুই নেতার অনুগামীরা ভাতার থানা ভবনের পাশে দলীয় কার্যালয়ে দলেরই বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ।
বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন ওই কর্মী-সমর্থকেরা। কার্যালয়ের চারপাশ ঘিরে রাখে পুলিশ। যদিও সরাসরি এনিয়ে কিছু বলতে চাননি পুলিশের কর্তারা। বিক্ষোভ বা ঘেরাওয়ের কথাও মানেননি তাঁরা। আর বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি ঘরে ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে বলতে পারব না।’’ যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ঠিক নয়, বলেও দাবি করেন তিনি।
এ দিন বিকেলে দিল্লির ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ সভা ছিল তৃণমূলের। দুপুর থেকেই বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা ব্লক সদর ভাতারে হাজির হয়ে যান। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দলীয় কর্মীদের হাত থেকে বাঁচতে কোনও রকমে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পড়েন তিনি। বাইরে তখন পঞ্চায়েতে টিকিট দেওয়া থেকে অঞ্চল সভাপতি করার জন্য বিধায়ক ‘কাটমানি’ নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের অনেক পুরনো কর্মীই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের সভায় যাওয়ার ‘টিকিট’ পাননি। আবার ব্লকের সব অঞ্চলের প্রধান, সভাপতিরা ওই সভায় যাওয়ার সুযোগ পেলেও মানগোবিন্দবাবুর অঞ্চলের সভাপতি বা প্রধানকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এ দিন। দলের কর্মীদের দাবি, বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন মানগোবিন্দ ও বনমালীর অনুগামীরাই। তাঁরাই বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। ‘সুভাষ তুমি ভাতার ছাড়ো’ বলেও স্লোগান ওঠে। এক তৃণমূল কর্মী শেখ মফিজুল হকের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া থেকে অঞ্চল সভাপতি করার জন্য বিধায়ক কাটমানি নিয়েছেন। দীর্ঘদিন আমরা চুপ করেছিলাম। কিন্তু কলকাতার সভায় ডাক পাওয়া নিয়ে কলকাঠি করায় ভাতারের তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা চুপ থাকতে পারেননি। এ রকম চললে বিধায়ককে ভাতারে ঢুকতেই দেব না।’’
মানগোবিন্দবাবু বলেন, “সব অঞ্চলই কলকাতার সভায় গেল, অথচ আমার অঞ্চলের সভাপতি ও প্রধান ডাক পেল না। এর পরেও কি এলাকার কর্মী-সমর্থকদের মনে ক্ষোভ হবে না? কেন ডাক এল না, সে জবাব তো বিধায়ককেই দিতে হবে।’’ বনমালীবাবুও বলেন, “ দলীয় কর্মীরা মনক্ষুন্ন হয়েছেন। সে জন্য উত্তেজিত হয়ে পড়েন।’’
দীর্ঘক্ষণ ওই পরিস্থিতি চলার পরে বিধায়কের সঙ্গে দলের ওই দুই নেতা বৈঠক করেন। তারপরে বিক্ষোভ ওঠে। সন্ধ্যার দিকে দলীয় কর্মসূচিও হয়। জানা গিয়েছে, শুক্রবার এ নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা।