প্রতীকী ছবি।
বেটিং চক্রে যুক্ত অভিযোগে মেমারির আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, দিঘা থেকে তাড়া করে এনে মেমারি শহরে ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্ধমান শহরের গোলাহাট থেকে একই অভিযোগে শেখ কামালউদ্দিন নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দিন কয়েক আগে আইপিএল নিয়ে ‘বেটিং’ চক্র চালানোর অভিযোগে মেমারি শহর থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, এর পরেই কয়েক জন যুবক রাতারাতি মেমারি শহর ছেড়েছে বলে খবর মেলে। ধৃতদের জেরা করে ‘বেটিং’ চক্রে যোগ রয়েছে, এমন কয়েক জনের ফোন নম্বর জোগাড় করা হয়। তার সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, বেশিরভাগ জন দিঘা ও মন্দারমণিতে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স অভিযুক্তদের গতিবিধি নজর রাখছিল। ওই যুবকেরা মন্দারমণি থেকে শনিবার সকালে দিঘায় পৌঁছয়। তাদের উপরে নজর রেখে সে দিন মেমারি থানার পুলিশও দিঘায় পৌঁছয়। নিউ দিঘার একটি হোটেলে উঠেছিল ওই যুবকেরা। সেখানে তারা দু’টি ঘর ভাড়া নিয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় দিঘা থানার পুলিশের সহযোগিতায় সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ।
পুলিশের দাবি, তাঁদের দেখে একটি গাড়িতে করে মেমারি শহরের ছ’জন যুবক পালানোর চেষ্টা করে। দিঘা থেকে তাদের তাড়া করে রবিবার সকালে মেমারি শহরের ব্রাহ্মণপাড়ার মুখে গাড়িটি আটক করা হয়। সেখান থেকেই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, মেমারির দিঘিরপাড়ের পল্লব মজুমদার ও সুদীপ মজুমদার, চিনুই গ্রামের বাসুদেব বিশ্বাস ও বিপ্লবচন্দ্র ধর, ভবেনপুকুর পাড়ের সমরেশ বিশ্বাস ওরফে গণেশ এবং ব্রাহ্মণপাড়ার প্রসেনজিৎ মাঝি নামে ওই যুবকেরা জেরায় তাদের কাছে বেটিং চক্রে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। ধৃতদের মোবাইলগুলি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশের আরও দাবি, প্রত্যেকটি মোবাইলেই ‘বেটিং’-এর বেশ কয়েকটা অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। সেগুলি নিয়মিত ব্যবহার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে একাধিক ‘অ্যাপ্লিকেশন আইডি’ এবং পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, এক-এক জন ৩০-৪০ জনকে নিয়ে দল গঠন করেছিল। বর্ধমান শহরের দু’জন এই এলাকায় চক্রটির পাণ্ডা বলে জেনেছে পুলিশ। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, এর আগে এই চক্রে জড়িত অভিযোগে ধৃত সুরঞ্জন বিশ্বাস, কালিচরণ সাউ ও পার্থসারথি বিশ্বাসকে দু’দফায় পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়ে জেরা করে নানা তথ্য মিলেছে। ক্রিকেট ছাড়াও, রাজনীতি-সহ নানা বিষয় নিয়েও তারা বেটিং চালায় বলে জানা গিয়েছে।
বর্ধমানের গোলাহাট থেকে ধৃতকে জেরা করে শহরের নীলপুর ও মেহেদিবাগানের কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে, দাবি পুলিশের। রবিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হলে মেমারির ছ’জনকে জেল হেফাজত ও গোলাহাটের ধৃতকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।