বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পদক্ষেপ করলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নিরাপত্তার কাজে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। বার্তা দেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কাজে গাফিলতির জন্য অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীদের আপাতত বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুলিশ পুলিশের মতো করে তদন্ত করছে। তার আগে কোথাও কর্তব্যে কোনও গাফিলতি হয়েছিল কি না, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমরাও তা খতিয়ে দেখতে চাই। ভাইরাল একটি ভিডিয়োতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক মহিলাকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। তার সঙ্গে অবশ্য মূল ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে কড়া বার্তা দেওয়ার জন্য ১২ জন অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীকে আমরা সাসপেন্ড করেছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল নানা মহল। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই এই নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও পেশ করেছিল। তবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক, অধ্যাপক এবং কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে মানবিকতার খাতিরে নিরাপত্তাকর্মীদের ভুল শুধরে আরও এক বার তাঁদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষপাতী সমিতি। এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অনুরোধ করবেন বলেও জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও রকম আপোস করা হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-অপারেটিভের মাধ্যমেই নিয়োগ করা হয়। আপাতত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়েই অস্থায়ী কর্মীদের অতিরিক্ত কাজ করানো হবে। যাঁরা অতিরক্ত কাজ করবেন, তাঁদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিকও দেওয়া হবে।
গত মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের ভিতরে একটি জলাশয় থেকে তরুণীর পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এসে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। সেই ঘটনার পরেই পদক্ষেপ করেছেন কর্তৃপক্ষ।