নতুন সাজ। আউশগ্রামের দিগনগরে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
একশো দিনের কাজে পুকুর কাটা, গাছ লাগানো, নর্দমা, রাস্তা এমনকি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঘর তৈরির মতো কাজ হয়েছে। এ বার চেনা উন্নয়নের কাজের বাইরে গিয়ে একশো দিনে এলাকার পুরাকীর্তি সংরক্ষণে জোর দিল পঞ্চায়েত। আউশগ্রামের দিগনগরে প্রায় তিনশো বছরের পুরনো বর্ধমান রাজাদের তৈরি স্থাপত্য সংস্কার করে সংলগ্ন সরকারি জায়গায় একটি পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। ‘চাঁদনি বা জলটুঙি’ নামে পরিচিত ওই স্থাপত্য সংস্কার প্রায় শেষের মুখে। স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন জেলাশাসক, ইতিহাস প্রেমীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিগনগরকে কেন্দ্র করে একসময় বর্ধমানের রাজারা বেশ কিছু স্থাপত্য তৈরি করেছিলেন। এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওই সমস্ত পুরাকীর্তি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তারই অন্যতম জলটুঙি। জানা যায়, ১৭৪০ সালের আগে চারদিক বাঁধানো জলাশয়ের মাঝে ওই ভবন তৈরি করেন মহারাজ কীর্তিচন্দ্র। কিন্তু দেখভালের অভাবে বাঁধানো সিঁড়ি, ঢোকার প্রবেশপথ সবই জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। রাজাদের স্মৃতি টিকিয়ে রাখতে পঞ্চায়েতের কাছে যান এলাকাবাসী। দাবি মেনে দিগনগর ১ পঞ্চায়েত এবং আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে জলটুঙি সংস্কার হয়।
আউশগ্রাম ১-এর বিডিও চিত্তজিৎ বসু বলেন, “সংস্কার করা না হলে একটি উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি নষ্ট হয়ে যেত। পঞ্চায়েত উদ্যোগী হওয়াতেই এটা সম্ভব হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো দিনের প্রকল্পের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির তহবিল থেকেও সাহায্য করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে এটির সংস্কারে। বহরমপুরের যে সংস্থা এই কাজ করেছেন তাঁদের তরফে ওঁকারনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘বিগত ছ’মাস ধরে গড়ে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। হেরিটেজ কমিশনের নিয়ম মেনে বিভিন্ন মাপের কাঠে পোড়ানো ইট এবং চুন-সুরকি দিয়ে কাজ করা হয়েছে। মূল ভবন ও জলাশয়ের মধ্যের অংশের ইট ক্ষয়ে গিয়েছিল। তোরণটিও প্রায় ফুট দুয়েক হেলে গিয়েছিল। সেগুলি ঠিক করে পুরো স্থাপত্যটি সেই সময়ের আদলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।’’
পুরনো জলটুঙি