Kalna

নোড়া পান্তুয়া, মাখা সন্দেশে ‘জিআই’ তকমার চেষ্টা

কালনা শহরে রয়েছে ছানার দু’টি বড় পাইকারি বাজার। আশপাশের গ্রাম থেকে প্রতিদিনই আড়তগুলিতে আসে প্রচুর ছানা। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ওই ছানা সংগ্রহ করে তৈরি করেন নানা স্বাদের মিষ্টি।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৭
Share:

মাখা সন্দেশ। নিজস্ব চিত্র

পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের টানে কালনা শহরে আসেন প্রচুর পর্যটক। তাঁদের অনেকেই শহর ও লাগোয়া এলাকার দোকানে মাখা সন্দেশ এবং নোড়া পান্তুয়ার স্বাদ নিয়ে যান। জনপ্রিয় এই দু’টি মিষ্টি যাতে ‘জিয়োগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ’ (জিআই) পেতে পারে, সে জন্য উদ্যোগী হল প্রশাসন।

Advertisement

কালনা শহরে রয়েছে ছানার দু’টি বড় পাইকারি বাজার। আশপাশের গ্রাম থেকে প্রতিদিনই আড়তগুলিতে আসে প্রচুর ছানা। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ওই ছানা সংগ্রহ করে তৈরি করেন নানা স্বাদের মিষ্টি। অতীতে বেশিরভাগ দোকানে কাঠের জাল দিয়ে উনুনে বড়-বড় হাতা দিয়ে নেড়ে খাঁটি ছানা ও চিনি দিয়ে তৈরি হত মাখা সন্দেশ। এখন কিছু দোকানের কারখানায় বসেছে সন্দেশ তৈরির আধুনিক যন্ত্র। শীতের মরসুমে স্বাদ বাড়ানোর জন্য মাখা সন্দেশে মেশানো হয় নলেন গুড়। অন্য দিকে, ছানা, খোয়া ক্ষীর-সহ বেশ কিছু সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয় নোড়া পান্তুয়া। ব্যবসায়ীদের অনেকেই এই দুই মিষ্টি নিয়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে বড় মেলাতেও যোগ দেন। সম্প্রতি এই দুই মিষ্টি যাতে ‘জিআই’ ট্যাগ পায়, সে জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে কালনার নোড়া পান্তুয়া নিয়ে বেশ কিছু তথ্য পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে। আরও কিছু তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা শুরু হয়েছে।

কালনা ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই মিষ্টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে এক জন আধিকারিককে। কত দিন ধরে এই মিষ্টিগুলি তৈরি হচ্ছে, কতটা ব্যবসা হয়, ক্রেতা কারা— এমন বেশ কিছু তথ্য মাখা সন্দেশ সম্পর্কে জানার কাজ শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি, চেষ্টা চলছে বিভিন্ন বইপত্রে মাখা সন্দেশ সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের।

Advertisement

কালনা ১ বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস জানান, কোনও পণ্যের ‘জিআই ট্যাগ’ পেতে গেলে সেটি সম্পর্কে বেশ কিছু প্রামাণ্য নথি প্রয়োজন। সেই সব নথিপত্র দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হয়। জেলায় নোড়া পান্তুয়ার বিষয়ে কিছু তথ্য পৌঁছেছে। মাখা সন্দেশের বিষয়ে তথ্য জোগাড় শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দুই মিষ্টি নিয়ে আরও কিছু তথ্য জানার জন্য মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে মিষ্টি ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি বৈঠক করার ভাবনা রয়েছে।’’

এলাকার দুই মিষ্টির ‘জিআই ট্যাগ’-এর জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগে খুশী ব্যবসায়ীরা। চকবাজার এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী রণজিৎ মোদক বলেন, ‘‘দু’টি মিষ্টির ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রয়োজনে আরও সাহায্য করব। জিআই ট্যাগ হলে কালনার মিষ্টির পরিচিতি আরও বাড়বে।’’ আর এক ব্যবসায়ী দেবরাজ বারুই জানান, শুধু এ রাজ্যে নয়, ভিন্‌রাজ্যে কালনার মিষ্টির কদর রয়েছে। জিআই ট্যাগ মিললে ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বক্তব্য, ‘‘কালনার নোড়া পান্তুয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে। মাখা সন্দেশেরও কদর রয়েছে। আশা করছি, জিআই তকমা পেতে অসুবিধা হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement