মসাগ্রামে সিগন্যালিং এবং ইন্টারলকিংয়ের কাজের জন্য ট্রনে পরিষেবা ব্যাহত হবে। নিজস্ব চিত্র।
আর মাত্র কয়েক দিন। জুড়ে যাচ্ছে বাঁকুড়ার সঙ্গে হাওড়া কর্ডলাইন। ১৪ নভেম্বর থেকে মসাগ্রামে শুরু হচ্ছে শেষ পর্যায়ের কাজ। আর এই কাজ শেষ হলেই দীর্ঘ দিনের স্বপ্নপূরণ হবে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এত দিন পর্যন্ত হাওড়া যেতে বাঁকুড়া আর পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর অঞ্চলের মানুষকে বিরাট ঝক্কি পোহাতে হত। বাঁকুড়া থেকে ট্রেনে এসে যাত্রীদের ট্রেনে মসাগ্রামে নামতে হয়। সেখান থেকে অনেকটা হেঁটে কর্ড লাইনের প্ল্যাটফর্মে যেতে হয়। আবার হাওড়া থেকে যাঁরা আসেন তাঁদেরও মসাগ্রাম স্টেশনে নেমে তাড়াহুড়ো করে বাঁকুড়া যাওয়ার ট্রেন ধরতে হয়। এ বার সেই দিন শেষ হতে চলেছে। তবে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে হবে ‘নন ইন্টারলকিং সিস্টেম’-এর কাজ।
ইতিমধ্যে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের তরফে চূড়ান্ত পর্বের কাজের জন্য নোটিস জারি করা হয়েছে। ওই নোটিসে বলা হয়, ১৪ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত মসাগ্রাম স্টেশনের কাছে হাওড়া-বর্ধমান কর্ডলাইনের সংযোগ করার কাজ চূড়ান্ত হবে। সে জন্য কর্ড ও মেন শাখায় দূরপাল্লা এবং লোকাল মিলিয়ে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল থাকবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, দু’টি শাখায় আপ এবং ডাউন মিলিয়ে ১৬ মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল থাকবে। এ ছাড়াও এই সময়ের মধ্যে বেশ কিছু লোকাল ট্রেনও বাতিল করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনের গতিপথও বদল করা হচ্ছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই হাওড়া-বাঁকুড়া রুটে নতুন ট্রেন চালানো হবে। তবে কবে থেকে চালু হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে কৌশিক বলেন, ‘‘আগে সংযোগের কাজ হোক।’’ তবে এই সংযোগ হলে বাঁকুড়া থেকে হাওড়ার দূরত্ব ২৩৫ কিলোমিটার থেকে কমে ১৮৫ কিলোমিটার হবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ লাভবান হবেন। ব্যবসা বাণিজ্য, অন্যান্য কাজকর্মের সুবিধা হবে বলেও দাবি স্থানীয়দের।
পূর্ব রেল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার মসাগ্রাম-শক্তিগড় স্টেশনের মাঝে সিগন্যাল সংক্রান্ত কাজ হবে। পাশাপাশি, মসাগ্রামে ইন্টারলকিংয়ের কাজও চলবে। ফলে চার দিন (১৪-১৭ নভেম্বর) হাওড়া মেন এবং কর্ড শাখায় বেশ কিছু দূরপাল্লা এবং লোকাল ট্রেন বাতিল থাকবে।
বাতিল হওয়া দূরপাল্লার ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে ১২৩৩৭ হাওড়া-বোলপুর শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস, ১৩০২৭ হাওড়া-আজিমগঞ্জ কবিগুরু এক্সপ্রেস, ১২৩৪৭ হাওড়া-রামপুরহাট শহিদ এক্সপ্রেস, ১৩১৮৭ শিয়ালদহ-রামপুরহাট মা তারা এক্সপ্রেস, ২২৩২১ হাওড়া-সিউড়ি হুল এক্সপ্রেস, ১২৩৮৩ শিয়ালদহ-আসানসোল ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, ১৩১৭৯ শিয়ালদহ-সিউড়ি মেমু। তবে ১৬ এবং ১৭ নভেম্বর বাতিল থাকবে ১৩০১৭ হাওড়া-আজিমগঞ্জ গণদেবতা এক্সপ্রেস। হাওড়া এবং শিয়ালদহগামী ডাউনে এই ট্রেনগুলি ওই চার দিন বাতিল থাকবে।
ওই চার দিন হাওড়া মেন এবং কর্ড শাখা বেশ কিছু আপ এবং ডাউন লোকাল ট্রেন বাতিল থাকবে। ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর কর্ড শাখায় হাওড়া থেকে বর্ধমানগামী ১১টি ট্রেন বাতিল থাকবে। আবার বর্ধমান থেকে হাওড়াগামী ১২টি লোকাল বাতিল থাকবে।
এই দু’দিন মেন শাখাতে হাওড়া থেকে বর্ধমানগামী ১১টি লোকাল এবং বর্ধমান থেকে হাওড়াগামী ১০টি লোকাল ট্রেন বাতিল থাকবে। ব্যান্ডেল থেকে বর্ধমানগামী তিনটি লোকাল, শিয়ালদহ থেকে বর্ধমানগামী দু’টি লোকাল চলবে না ১৪ এবং ১৫ নভেম্বর। অন্য দিকে, ওই দু’দিন বর্ধমান থেকে ব্যান্ডেলগামী তিনটি এবং বর্ধমান থেকে শিয়ালদহগামী দু’টি লোকাল বাতিল থাকবে। ১৬ এবং ১৭ নভেম্বরও দুই শাখাতে একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন বাতিল থাকবে।