—প্রতীকী চিত্র।
বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আসানসোল সাংগঠনিক জেলায় লক্ষাধিক সদস্য সংগৃহীত হয়েছে বলে দাবি নেতৃত্বের। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে মিস্ড কলের মাধ্যমে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় (আসানসোলের সাতটি বিধানসভা ও দুর্গাপুরের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র মিলিয়ে) দলের সদস্য হয়েছিলেন প্রায় আড়াই লক্ষ জন। এ বার আসানসোল সাংগঠনিক জেলায় (আসানসোলের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে) বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ছুঁয়েছে। তাতে খুশি বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি সূত্রে জানা যায়, প্রথমে রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, দলের কোনও কর্মী ১০০ জন সদস্য তৈরি করলে তাঁকে ‘সক্রিয় সদস্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ২৭ অক্টোবর এই অভিযান শুরু হয়। ১৫ ডিসেম্বর তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে সক্রিয় সদস্য হওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে ৫ জানুয়ারি করা হয়েছে। এমনকী, সক্রিয় সদস্য হওয়ার জন্য ১০০ থেকেকমিয়ে ৫০ জন করা হয়েছে সদস্য তৈরির সংখ্যা।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসানসোল সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহে এগিয়ে রয়েছে আসানসোল উত্তর বিধানসভা এলাকা। সেখানে ১৭,৮৭৫ জন সদস্য হয়েছেন। এই সংখ্যার আশপাশেই আছে আসানসোল দক্ষিণ ও কুলটি বিধানসভা কেন্দ্র। সব থেকে পিছিয়ে আছে পাণ্ডবেশ্বর ও জামুড়িয়া এলাকা। ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই দুই জায়গায় যথাক্রমে ৫,২২৮ ও ৫,৯৭৬ জন সদস্য হয়েছেন।
দল সূত্রের খবর, পাণ্ডবেশ্বর ও জামুড়িয়ায় প্রাথমিক সদস্যদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ সক্রিয় সদস্য হয়েছেন। আসানসোল উত্তরে সক্রিয় সদস্য ৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বিজেপির আসানসোল জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় দাবি করেন, বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের পরে বারাবনি এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি কাপিষ্ঠা ও সরিষাতলিতে সদস্য সংগ্রহে গেলে কয়েক জন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে তাঁরা সদস্য হওয়ায় সন্ত্রাসের শিকার হতে হয়েছিল। কিছু দিন দোকান বন্ধও রাখতে হয়েছিল। তাই তাঁরা আর প্রকাশ্যে সদস্যপদ নেবেন না। এই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালাতে হচ্ছে, দাবি অভিজিতের।
জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রে দলের আহ্বায়ক সাধন মাজির অভিযোগ, ‘‘গত লোকসভা ভোটের পরে অনেক পুরনো কর্মীরও মনোবল ভেঙে গিয়েছে। জেলা নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে সে ভাবে যোগাযোগ করে কাজে নামাননি। এ সবের কারণেও সদস্য সংগ্রহের পরিমাণ কমে গিয়েছে।’’ তবে তাঁর দাবি, ধীরে ধীরে পুরনো কর্মীরা পথে বেরোচ্ছেন। তাতে সদস্য সংগ্রহ অভিযান গতি পাবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেরই দাবি, জেলা নেতৃত্ব বহু কর্মীকে এই কাজে যুক্ত না করায়, পাঁচ বছর আগের সদস্য সংখ্যা ছুঁতে পারেনি দল। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুইয়ের যদিও বক্তব্য, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে সদস্য সংগ্রহের আলাদাগুরুত্ব রয়েছে। সেই নিরিখে এ বার সাফল্য অনেক বেশি। রীতিমতো সমস্ত নথি যাচাই করে সদস্য করা হয়েছে। নতুন সদস্যেরা অনেককে উদ্বুদ্ধ করবেন।’’ দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিটি সক্রিয় কর্মীকে ১০০ জনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কথা বলা হয়েছে।’’