চওড়া হয়নি সেতু, মৃত্যু জওয়ানের

যানবাহনের চাপ বাড়লেও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর জামুড়িয়ার চাকদোলা সেতুর সম্প্রসারণ ও সংস্কার হয়নি। আর এর জেরেই সেতুটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। শুক্রবার ওই সেতুর উপর পথ দুর্ঘটনায় এক সিআইএসএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সবসময় দেখা মেলে না ট্রাফিক পুলিশেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০০:৪৩
Share:

দুর্ঘটনার পর রাস্তায় যানজট। —নিজস্ব চিত্র।

যানবাহনের চাপ বাড়লেও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর জামুড়িয়ার চাকদোলা সেতুর সম্প্রসারণ ও সংস্কার হয়নি। আর এর জেরেই সেতুটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের। শুক্রবার ওই সেতুর উপর পথ দুর্ঘটনায় এক সিআইএসএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সবসময় দেখা মেলে না ট্রাফিক পুলিশেরও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর পৌনে ৬টা নাগাদ শীতলপুর থেকে গাড়ি করে শিলিগুড়িতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন সিআইএসএফ জওয়ান ভিক্কি শর্মা (৫০)। চাকদোলা সেতুর মাঝামাঝি উল্টোদিক থেকে বীরভূমের প্যাচামি থেকে একটি পাথরবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে ভিক্কিবাবুর গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। জখম হন ভিক্কিবাবু ও গাড়ির চালক কার্তিক কুমার। দু’জনকেই দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। পথেই মারা যান ভিক্কিবাবু। কার্তিকবাবুকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ট্রাকের চালক ও খালাসি পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ভিক্কিবাবুর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অন্ডালের শীতলপুর কোলিয়ারিতে রিজার্ভ ইন্সপেক্টরের পদে কাজ করতেন ভিক্কিবাবু। ৩০ মে তাঁকে ঝাড়খণ্ডের বোকারো ইস্পাত কারখানায় বদলি করা হয়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকদোলা সেতুর উপরের রাস্তাটি আগে সিউড়ি–রানিগঞ্জ রোড নামে পরিচিত ছিল। ২০০০ সালে রাস্তাটিকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ হলেও চাকদোলা সেতুটি পুরনো অবস্থাতেই থেকে গিয়েছে। অথচ এই রাস্তাটিই দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের মধ্যে অন্যতম প্রধান যোগসূত্র। জাতীয় সড়ক হওয়ার পর যানবাহনের চাপ বাড়লেও সেতুটিকে চওড়া করা হয়নি। এর জেরে দু’লেনের রাস্তাও তৈরি করা যায়নি। এ দিন কোনও ট্রাফিক ব্যবস্থারও দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক পুলিশ জানান, সেতুর কাছে ২৪ ঘণ্টার ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকা দরকার। গাড়ির চালকেরা জানান, উল্টোদিক থেকে দ্রুত গতিতে গাড়ি ধেয়ে এলে অনেক সময়ই নিয়ন্ত্রণ রাখতে অসুবিধা হয়। তা ছাড়া অনেক সময় রেষারেষির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ দিনের দুর্ঘটনার জেরে প্রায় ঘণ্টা খানেকের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়ক। বিপাকে পড়ে যাত্রীবাহী বাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক।

চাকদোলার অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিচুড়িয়ার গৌতম চক্রবর্তীদের অভিযোগ, ‘‘বারবার আবেদন জানানো হলেও প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে সমস্যা সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ২৮ মে, বৃহস্পতিবার একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিং-এ ধাক্কা মারে।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বারবার সেতু সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য আবেদন করা হলেও প্রতিকার মেলেনি।’’ এ দিন অবশ্য চেষ্টা করা সত্ত্বেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement