খুনের তদন্তে হিরাপুরে ধৃত অস্ত্র কারবারি

এই অস্ত্র কী ভাবে মিলেছিল, এর পরে তারই খোঁজে নামে হিরাপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীর জানান, তখনই প্রভাসের নাম জানা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১২
Share:

প্রভাস বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে হদিস মিলল প্রভাস বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবলু নামে বার্নপুরের এক অস্ত্র-ব্যবসায়ীর। ইস্কোর প্রাক্তন কর্মী প্রভাসকে গ্রেফতার করে ছ’টি নাইন এমএম পিস্তল, ৭৯০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ মিলেছে বলে দাবি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের। কিন্তু এলাকাবাসীর প্রশ্ন, পুলিশের নাকের ডগায় কী ভাবে চলছিল অস্ত্র বিকিকিনির এই কারবার।

Advertisement

গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বার্নপুরের নবঘণ্টি লাগোয়া গোলপার্কের কাছে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ক্যাটারিং ব্যবসায়ী রানা বন্দ্যোপাধ্যায়। গুরুতর জখম হন তাঁর মাসতুতো ভাই মিঠুন চক্রবর্তী। ওই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে মিল্টন সেন ও তার ছেলে সাগর সেন এবং ওই দু’জনের সঙ্গী অজয় হাড়িকে। ক্যাটারিং ব্যবসায়ী রানাকে খুনের ঘটনায় আরও এক জনের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়। মিল্টনদের কাছ থেকে রানাকে খুনের জন্য ব্যবহৃত তিনটি রিভলভার ও কয়েক রাউন্ড তাজা কার্তুজ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।

এই অস্ত্র কী ভাবে মিলেছিল, এর পরে তারই খোঁজে নামে হিরাপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীর জানান, তখনই প্রভাসের নাম জানা যায়। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যক্তি বার্নপুরের হিরাপুর ঠাকুরবাড়ি লাগোয়া কুলিনপাড়ার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, খুনের ঘটনায় ধৃতেরা জানায়, তারা অস্ত্র ও গুলি কিনেছিল প্রভাসের কাছ থেকেই।

Advertisement

উদ্ধার: এই সমস্ত অস্ত্র ও টাকা উদ্ধার হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

এর পরে সোমবার রাত প্রভাসের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির কাছ থেকে পিস্তল, কার্তুজের ছাড়া আরও প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’ প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলি বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি। সেখান থেকেই প্রভাস তা কিনে এনে শিল্পাঞ্চলে কারবার চালাত।

কে এই প্রভাস? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি ইস্কোয় কাজ করতেন। ২০১৩ সালে কাজ থেকে অবসর নেন। এর আগে প্রভাসের বিরুদ্ধে কমিশনারেটের কোনও থানায় অপরাধের পুরনো রেকর্ড নেই বলেই পুলিশ জানায়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে প্রভাস জানিয়েছে, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি অস্ত্রের কারবার শুরু করেন। যদিও পুলিশ কর্তারা এই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের অনুমান, অনেক আগে থেকেই অস্ত্র-কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ওই ব্যক্তির। ধৃতকে মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। আর কোন কোন এলাকায়, কাদের অস্ত্র বিক্রি করেছে প্রভাস, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে বলে জানান এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস। এই গ্রেফতারির খবর চাউর হতে এলাকাবাসী অবশ্য বিস্মিত। এলাকাবাসীর একাংশ জানান, অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির মানুষ হিসেবেই পরিচিত বছর পঁয়ষট্টির প্রভাস। কথাবার্তায় মিষ্টিভাষী হওয়ায় কখনও কারও সঙ্গে প্রভাসের গোলমালও হয়নি বলে জানান এলাকাবাসী।

অন্য দিকে, এলাকায় অস্ত্র কারবার চলার খবর চাউর হতেই নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। শহরে আরও বেশি পুলিশি নজরদারিও দাবি উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement