—প্রতীকী চিত্র।
ঘুমের মধ্যেই বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা মারে বালি বোঝাই ডাম্পার। পাঁচিল চাপা পড়ে মারা যান সন্ধ্যা হাজরা (৫২) নামে এক প্রৌঢ়া। পাশে শুয়ে থাকা তাঁর স্বামী সুকুমার হাজরাও জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জামালপুরের প্রাণবল্লভপুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে ওই বাড়ির বাকি সদস্যদের উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার রাতেও জামালপুরের হালাড়া মোড়ে একটি বালি বোঝাই ডাম্পার উল্টে ছ’টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দু’মাস আগে বালি বোঝাই একটি ডাম্পার এক মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ে। প্রাণ হারিয়েছিলেন মোটরবাইক আরোহী। পুলিশ ওই ডাম্পার ও তার চালককে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে জামালপুর থেকে বালি বোঝাই ডাম্পারটি হুগলির তারকেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল। চকদিঘি পঞ্চায়েতের প্রাণবল্লভপুরে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারে। ডাম্পারের মুখটি ঘুরে গিয়ে রাস্তার পাশে থাকা বাড়ির দেওয়ালে ধাক্কা মারে। সেখানেই ঘুমিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ় দম্পতি। স্থানীয় লোকজনের দাবি, উঁচু করে বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ডাম্পারে। চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। পুলিশকে সঙ্গে করে বাড়ির ভিতরে থাকা বাকি সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। মৃতা ডাম্পার আর পাঁচিলের মাঝে আটকে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সকালে ডাম্পার সরানোর পরে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃতার ছেলে বাসুদেব হাজরার দাবি, “আমরা পাশের ঘরে শুয়েছিলাম। মাঝরাতে বিকট আওয়াজ হয়। চারদিকে অন্ধকারের মধ্যে পড়শিদের চিৎকার। ঘরের বাইরে এসে দেখি ডাম্পার আমাদের বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়়েছে। চালক নিজেই নিয়ন্ত্রণহীন, তিনি কী ভাবে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ করবেন?”
মাস দু’য়েক আগে জামালপুরেরই কেরিলি পেট্রল পাম্পের কাছে এক মোটরবাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে একটি ট্রাক বাড়ির ভিতর ঢুকে যায়। ওই মোটরবাইক আরোহী ঘটনাস্থলেই মারা যান। জখম হন দু’জন। তখনও নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। বুধবার রাতেও জামালপুরের হারালা মোড়ে একটি বালি বোঝাই ডাম্পার উল্টে যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কয়েকশো বালি বোঝাই গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। রাত বাড়লে বালি বোঝাই ট্রাক, ডাম্পার বেপরোয়া হয়ে ওঠে। জামালপুরের বিপত্তারিণী মন্দির পার করেই হারালা মোড়। সেখানে সামান্য বাঁক রয়েছে। ওই বাঁকের পাশে ডাম্পারটি উল্টে যাওয়ায় চারটে চালের দোকান, একটি বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দোকান-সহ ছ’টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই দিন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জামালপুরে দামোদরের বিভিন্ন ঘাট থেকে বড় বড় ডাম্পারে বালি বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, “বারবার কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। যে সব অভিযোগ বা দাবি উঠছে, সেগুলিরও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জামালপুর থানার দাবি, মত্ত চালকদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।