শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, এ ভাবেই অবৈধ খনিতে চলে কয়লা কাটা। নিজস্ব চিত্র।
অবৈধ খনির জল ঢুকে পশ্চিম বর্ধমানের নরসমুদা কোলিয়ারিতে শনিবার বিকেল পর্যন্ত কয়লা কাটা বন্ধ রয়েছে। এই ঘটনার মধ্যেই সম্প্রতি অবৈধ খনির জল ইসিএল-এর পাটমোহনা কোলিয়ারিতেও ঢুকেছে বলে দাবি। পাশাপাশি, জল ঢোকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বেজডিহি খনিতেও। এই পরিস্থিতিতে ব্যবস্থার দাবিতে ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও। তবে ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
গত ১৮ জুন প্রবল বর্ষায়, অবৈধ খনির মুখ দিয়ে বৃষ্টির জল ঢুকে তা পৌঁছে যায় ইসিএল-এর নরসমুদা ভূগর্ভস্থ খনিতে। শ্রমিক নিরাপত্তার স্বার্থেই কয়লা কাটা বন্ধ করে দেন খনি কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনার পরে ইসিএল-এর পাটমোহনা ও বেজডিহি খনির নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনগুলি। কারণ, এই দু’টি খনি নরসমুদা খনির খুব কাছেই অবস্থিত। প্রতিটি খনির ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ-পথ একে অপরের সঙ্গে মিলে গিয়েছে। আবার পাটমোহনা ও বেজডিহি কোলিয়ারির মাঝে বেশ কয়েকটি অবৈধ খনি আছে বলে অভিযোগ ‘হিন্দ মজদুর সভা’-র কয়লা অঞ্চলের সভাপতি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের।
এই পরিস্থিতিতে সিটু নেতা তথা ইসিএল-এর ‘জয়েন্ট বাইপারটাইট কমিটি ফর দি কোল ইন্ডাস্ট্রি’-র (জেবিসিসিআই) সদস্য সুজিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পাটমোহনা খনির কিছু অংশে জল ঢুকেছে। তবু কাজ চালানো হচ্ছে। শ্রমিক নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে জল ঢোকা বন্ধ করা উচিত।’’ ‘হিন্দ মজদুর সভা’র কয়লা অঞ্চলের সভাপতি উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘অবৈধ খনিগুলি দ্রুত ভরাট করার জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছি।’’ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আইএনটিইউসির সোদপুর এরিয়া কমিটির সভাপতি প্রজয় মোসিও।
শ্রমিক সংগঠনগুলির হিসেবে, পাটমোহনা খনির ভূগর্ভে আর ৪ ও আর ৮ নম্বর পিটে প্রায় পাঁচ কোটি কিউবিক গ্যালন জল জমে আছে। এই দু’টি পিটে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত আছে। জমা জল বার না করা হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি, উন্নত মানের কয়লা নষ্ট হবে। পাশাপাশি, বেজডিহিতেও জল ঢোকার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
যদিও পাটমোহোনা কোলিয়ারির ম্যানেজার শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রতি বর্ষাতেই জল ঢোকে। এ বারও সামান্য ঢুকেছে। পাম্পের সাহায্যে জল বার করা হচ্ছে। শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে না।’’ বেজডিহি কোলিয়ারির ম্যানেজার মনোজ মিশ্র বলেন, ‘‘শ্রমিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’’ যদিও বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘‘মন্ত্রীর কাছে অবৈধ খাদান দ্রুত ভরাট করার জন্য পদক্ষেপ করার দাবি করেছি।’’