ঢলদিঘির বাণিজ্যিক ভবনটি খতিয়ে দেখছেন প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র।
আইন মোতাবেক না এগিয়ে কিংবা ভাড়া থাকা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গায়ের জোরে বর্ধমান শহরের জিটি রোডের ধারে একটি বাণিজ্যিক ভবন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে। বুধবার ওই বাণিজ্যিক ভবনের পাঁচ ব্যবসায়ীর আবেদনের ভিত্তিতে জেলা দেওয়ানি আদালতের (জুনিয়র) বিচারক এক আইনজীবীকে ঢলদিঘি এলাকায় সরেজমিন তদন্তেও পাঠান।
ওই বাণিজ্যিক ভবনের পিছনে ঢলদিঘির একাংশ বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণেরও অভিযোগ রয়েছে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) অশোক সাহা বর্ধমান থানায় এফআইআরও দায়ের করেছেন বিষয়টি নিয়ে। এমনকী, সোমবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল ও পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত ঢলদিঘির ওই অংশকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেন। যদিও বুধবার বিকেলে ঢলদিঘিতে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরের ভিতরের একটা অংশ টিন দিয়ে ঘেরা রয়েছে।
জেলাশাসক জানান, আজ, বৃহস্পতি তিনি ফের ঢলদিঘি পরিদর্শন করে দেখার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। আর পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘বর্ধমান থানা ভূমি দফতরকে চিঠি দিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তবে ঢলদিঘির শুধু ওই এলাকা নয়, চারিদিকেই বোজানোর অজস্র নিদর্শন মিলেছে। এ দিন আদালতের নির্দেশে তদন্তে আসা আইনজীবীকে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বহুজাতিক বাণিজ্যিক ভবন গড়ার জন্যই ‘গায়ের জোরে’ ওই নির্মাণকারী সংস্থা বাড়ি ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর পিছনে পুরসভার ভূমিকাও রয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুরসভা বাড়ি ভাঙার অনুমতি দিল না, অথচ ওই জায়গার উপরে নতুন ভবন তৈরির অনুমতি দিয়ে দিল! এ ছাড়া জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পুরপ্রধান পুরো বিষয়টি দেখে গেলেও ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীদের অন্যতম আইনজীবী রাজদীপ গোস্বামীর অভিযোগ, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে ওই বাণিজ্যিক ভবন ভেঙে ফেলার জন্য একটি চক্র তৈরি হয়েছে।’’
পুরপ্রধানকে জিজ্ঞেস করা হলে প্রথমে জেলাশাসকের দিকে বিষয়টি ঠেলে দেন তিনি। কিন্তু বাড়ি তৈরি বা ভাঙার ব্যাপারে জেলাশাসক কী করবে জানতে চাওয়ায়, অস্বস্তি কাটিয়ে তাঁর জবাব, ‘‘ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নজরে নিয়ে আসেননি।”
ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিনোদ অগ্রবাল জানিয়েছেন, তাঁরা আইন অনুযায়ী কাজ করছেন।