কমিশনে বামেরা

পুলিশের নামে পক্ষপাতের নালিশ

নির্বাচন কমিশন নয়, জেলার কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক কাজ করছেন শাসক দলের হয়ে— মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এমনই অভিযোগ জানাল জেলা সিপিএম। এর আগেও সিপিএম নির্দিষ্ট করে বর্ধমানের আইসি, কুলটির আইসি, খণ্ডঘোষের ওসি, গলসির ওসির নামে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। গত মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে ই-মেল করে ওই সব পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে রায়না ও মন্তেশ্বরের ওসির নামও জুড়েছেন সিপিএম নেতারা। জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, “অভিযোগগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৬
Share:

নির্বাচন কমিশন নয়, জেলার কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক কাজ করছেন শাসক দলের হয়ে— মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে এমনই অভিযোগ জানাল জেলা সিপিএম। এর আগেও সিপিএম নির্দিষ্ট করে বর্ধমানের আইসি, কুলটির আইসি, খণ্ডঘোষের ওসি, গলসির ওসির নামে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। গত মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে ই-মেল করে ওই সব পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে রায়না ও মন্তেশ্বরের ওসির নামও জুড়েছেন সিপিএম নেতারা। জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা বলেন, “অভিযোগগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

শুক্রবার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে একটি সর্বদলীয় বৈঠকেও সিপিএমের প্রতিনিধিরা ওই সব পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করেন। তাঁদের দাবি, ওই পুলিশ আধিকারিকদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করা হলে বিরোধীরা সঠিক বিচার পাবেন না।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক ই-মেলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন এ বঙ্গে বিধানসভা ভোট সুষ্ঠু ভাবে করার উদ্যোগ করলেও রাজ্যের কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল বলে তাঁদের দাবি। সিপিএমের অভিযোগ, পুলিশের প্রত্যক্ষ মদতে গত লোকসভা নির্বাচনে কার্যত জেলা জুড়ে তৃণমূল বাহিনী ভোট লুঠ করেছিল। পুলিশকর্মীদের একাংশের প্রত্যক্ষ মদতে বিরোধীরা সব বুথে এজেন্টও দিতে পারেনি। এ বারেও কয়েকজন তৃণমূলের হয়ে পক্ষপাত করছে বলে তাঁদের দাবি। এমনকী, শাসক দলের হয়ে নির্বাচনী ‘কৌশল’ও ঠিক করে দিচ্ছে। সিপিএমের আরও অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী এবং নেতাদের সঙ্গে থানায় বসে আলোচনায় ব্যস্ত থাকছেন ওই পুলিশ আধিকারিকেরা।

Advertisement

এ দিন নির্বাচন কমিশনের কাছে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন নয়, শাসক দলের কথা শুনে পুলিশের একাংশ চলছে।” সিপিএমের অভিযোগ, গলসির ওসি রাকেশ সিংহ যখন মেমারিতে ছিলেন, তখন পুরভোটের ফল বের হওয়ার পরে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ ছবি প্রকাশ্যে আসে। তেমনই মন্তেশ্বরের ওসির সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থীর যোগাযোগ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। জেলা সম্পাদকের অভিযোগ, “মন্তেশ্বরের ওসি বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন, তৃণমূল প্রার্থীকে তিনি জিতিয়েই ছাড়বেন! আমরা এ নিয়েও নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েছি।”

তবে সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির থাকা বর্ধমান জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের দাবি, “পুলিশকে ব্যবহার করে সিপিএমের মতো তৃণমূল ভোটে লড়াই করেনা। মানুষের শক্তিই আমাদের শক্তি।”

এ দিন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আব্দার রেজ্জাক মণ্ডল ও উদয় সরকাররা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যকর করা থেকে প্রশাসনের নানা খামতির কথা তুলে ধরেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকরা আউশগ্রামের শাসক দলের একটি সভা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়াও বিরোধীদের অভিযোগগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement