ভোট করানো নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। তারই মধ্যে আবার দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পুরভোট নিয়ে এমন পরিস্থিতিতে আসানসোলে সব দলেরই দাবি, ভোট যখনই হোক , তারা তৈরি।
সংযুক্তিকরণের কারণ দেখিয়ে রাজ্যের সাত পুরসভায় ভোট করায়নি রাজ্য সরকার। তার মধ্যে চারটিই এই শিল্পাঞ্চলের— আসানসোল, কুলটি, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এ ভাবে ভোট আটকে রাখা বেআইনি জানিয়ে ১৬ জুনের মধ্যে ওই পুরসভাগুলিতে ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। এ দিনই আবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন ১৪ জুন ভোটগ্রহণ ও ১৬ জুন গণনার কথা জানিয়েছে। এর জন্য রাজ্য সরকারকে ২০ মে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। কিন্তু রাজ্য ইতিমধ্যে এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় সে নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আসানসোল ও কুলটি পুরসভার মেয়াদ ফুরিয়েছে গত বছর মে মাসে। দু’টিতেই ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। এখন এই দুই পুরসভায় প্রশাসক হিসেবে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। আসানসোল পুরসভায় আবার প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য প্রাক্তন মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া পুরসভায় বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৭ জুন। দু’টিতেই ক্ষমতায় রয়েছে বামেরা।
সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয়, সে দিকে এখন তাকিয়ে সব পক্ষই। তবে ১৪ জুন ভোট হলে তাঁরা কতটা প্রস্তুত, সে প্রশ্নে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তাপসবাবুর বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করছি না। তবে পুরসভার সংযুক্তিকরণের পরে ভোট হবে না পৃথক ভাবে হবে, তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার। ভোট যখনই হোক, আমরা পুরোপুরি তৈরি।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘শাসকদল মুখে তৈরি বললেও তাদের সরকার তো সুপ্রিম কোর্টে দৌড়েছে। অবাধ ভোট হলে ওরা যে জিতবে না, তা বুঝতে পারছে।’’ তিনি দাবি করেন, ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হলেই তাঁদের প্রার্থিতালিকা জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
গত লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে আসানসোল, কুলটি ও রানিগঞ্জ— তিন এলাকাতেই এগিয়ে বিজেপি। দলের আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারের সাফ কথা, ‘‘আমরা এ বার পুরবোর্ড দখল করব জেনেই ভয় পেয়েছে শাসকদল। তাই শুধু ভোট পিছিয়ে দেওয়ার খেলায় মেতেছে।’’ কংগ্রেস নেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাব, এটুকু বলতে পারি।’’