প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ে। বাড়ে দামও। এই সময় ফসল বিক্রি করে মুনাফা পেতে গেলে জোর দিতে হবে পেঁয়াজ সংরক্ষণে, এমনই পরামর্শ দিলেন কৃষি-কর্তারা। বুধবার কালনা কৃষি খামারে চাষিদের নিয়ে একটি শিবিরে কী ভাবে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়, তার নানা খুঁটিনাটি জানান উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা। কালনা ১ ব্লকে পেঁয়াজ চাষিদের নিয়ে যে কৃষক উৎপাদক সংস্থা গড়া হয়েছে তার থেকে কী সুবিধা মিলবে, জানানো হয় তা-ও।
এই রাজ্যে হুগলির পরেই শীতকালীন সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ চাষ হয় পূর্ব বর্ধমানে। পেঁয়াজ চাষের বেশির ভাগ এলাকা কালনা মহকুমায়। এ দিন কৃষি আধিকারিকেরা জানান, শুধু চাষ করলেই হবে না, পরিকল্পনা করে চাষ করতে হবে। নাসিকের পেঁয়াজ কখন বাজারে আসছে তা মাথায় রেখে ফসল তুলতে হবে। ওই দফতর সূত্রে জানা যায়, হুগলিতে ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন মজুত করার ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি বায়ু-নিরোধক হিমঘর গড়া হয়েছিল। তাতে সাফল্য মেলেনি। কিন্তু চাষিরা বাড়ির আশপাশে ছোট আকারে নিজেরাই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন, দাবি তাঁদের। এমনকি, সমবায়ের মাধ্যমেও ওই উদ্যোগ করা যেতে পারে।
জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘড়াই জানান, তাঁরা চান যত জন চাষি, ততগুলি সংরক্ষণ কেন্দ্র। বর্তমানে এক একটি সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়তে খরচ হয় এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে সরকারি ভর্তুকি রয়েছে ৮৭,৫০০ টাকা। তার পরেও চাষিরা এ বিষয়ে উদ্যোগী হন, না আক্ষেপ ওই কর্তার। তাঁর দাবি, জেলা থেকে গত কয়েক মাসে ২০ জন চাষি আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করেছেন ছ’জন। বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের এলাকা বাড়ানোরও পরামর্শ দেন তিনি।
এ দিনের বৈঠকে জেলা আধিকারিক ছাড়াও হাজির ছিলেন মহকুমা উদ্যান পালন আধিকারিক পলাশ সাঁতরা, সমবায় দফতরের কাটোয়া-কালনা জোনের এআরসিএস বিমল মজুমদার, জেলা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইসমাইল শেখ, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী পাল, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শ্যামল দাঁ প্রমুখ। তাঁরা জানান, পেঁয়াজ চাষিদের উন্নতির জন্য কালনা ১ ব্লকে কৃষক উৎপাদক সংস্থা গড়া হয়েছে। সেখান থেকে উন্নত মানের বীজ, কম দামে সার, কীটনাশক মিলবে। কিন্তু সংস্থার জন্য এক হাজার অথবা তার বেশি চাষির প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত কালনায় সংস্থার সদস্য সংখ্যা চারশো জন। এ ছাড়া, আরও কোন ধরনের পেঁয়াজ চাষে ভাল লাভের সম্ভাবনা রয়েছে, তা-ও জানানো হয়।