অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে রাখি পরালেন অগ্নিমিত্রা পাল। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর সঙ্গে ‘মলয়কাকু’র সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে এখনও বিতর্ক তাজা গেরুয়াশিবিরে। এই আবহেই বৃহস্পতিবার টিকাকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে তৃণমূল নেতা তথা আসানসোল পুরসভার প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে রাখি পরিয়ে দিলেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। যদিও অমরনাথ এবং অগ্নিমিত্রা দু’জনেরই বক্তব্য, এটা সৌজন্যের বার্তা।
দিন কয়েক আগে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাদের করোনার টিকা দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিধায়ক অগ্নিমত্রা। পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। পুরসভা ঘেরাও অভিযানও করে বিজেপি। প্রত্যুত্তর দেন অমরনাথও। দুই শিবিরের বাদানুবাদ চরমে ওঠে। যদিও সেই পরিবেশ মুছে গিয়েছে বৃহস্পতিবার। আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড়ের সম্প্রীতি ভবনে টিকা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান অগ্নিমিত্রা। সেখানে তিনি মুখোমুখি হন অমরনাথের। প্রাথমিক সৌজন্য বিনিময়ের পর অগ্নিমিত্রা তাঁর ব্যাগ থেকে রাখি বের করে বেঁধে দেন অমরনাথের হাতে। অগ্নিমিত্রা অমরনাথের উদ্দেশে বলেন, ‘‘বোনের আবদার শুনতে হবে।” এ-ও বলেন, ‘‘দাদা যদি কোনও আদেশ দেন, নিশ্চয়ই পালন করব।’’
অগ্নিমিত্রার যুক্তি, ‘‘এই সৌজন্যবোধ, শিষ্টাচার শিখে বড় হয়েছি। এর সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানো উচিত হবে না।’’ তিনি বলছেন, ‘‘আমার বিধানসভার ২৫০ জন বাসিন্দা টিকা পাচ্ছিলেন না। আমরা স্মারকলিপি দিই। অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তাঁদের টিকা দেওয়ার। আমি সেই জন্য গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে অমরনাথদার সঙ্গে দেখা হল। দু’দিন আগেই রাখি হয়েছে। তাই রাখি পরালাম। এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতেও দরকার। দলের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষ এসব করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সৌজন্য দেখান।’’
অমরনাথ বলছেন, ‘‘উনি (অগ্নিমিত্রা) আমাকে একটা তালিকা দিয়েছিলেন। আমি স্লট বুক করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ওখানে উনি এসেছিলেন। সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। উনি রাখি পরান। উন্নয়ন নিয়েও কথা হয়। সায়নীও আমাকে নিয়মিত ফোন করেন। ওঁর সঙ্গেও উন্নয়ন নিয়ে কথা হয়।’’
কিছু দিন আগে আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাখছেন বলে আলোচনা শুরু হয় বিজেপি-র একটি শিবিরে। পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে অগ্নিমিত্রার আলোচনা হয়েছে বলে গুঞ্জন ওঠে দলেই। যদিও এই বিতর্কের মুখে অগ্নিমিত্রা জানিয়ে দেন, বিধায়ক হিসেবে কাজ করার জন্য রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা অন্যায় নয়। তিনি আরও বলেন, ‘‘যেমনটা রটানো হচ্ছে তেমনটা আদৌ নয়।’’