রূপনারায়ণপুর

বেহাল পড়ে বাজার, ভাড়া বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা

পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য টাকা নেওয়া হয় নিয়মিত। কিন্তু কাজ কিছুই হয় না— এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন রূপনারায়ণপুরের ডাবর মোড় লাগোয়া বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২১
Share:

পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য টাকা নেওয়া হয় নিয়মিত। কিন্তু কাজ কিছুই হয় না— এমন অভিযোগে সরব হয়েছেন রূপনারায়ণপুরের ডাবর মোড় লাগোয়া বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা। বাজারটির সংস্কার, নিয়মিত সাফাই, শৌচাগার নির্মাণের পাশাপাশি বর্ধিত ভাড়া কমানোর দাবিতেও সরব হয়েছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাজারটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির কাছে বারবার আবেদন করেও ফল হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী সমাধানসূত্র বের করতে আজ, সোমবার ফের এক প্রস্ত বৈঠক ডাকা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২৫ বছর আগে রূপনারায়ণপুরে এই বাজারটি তৈরি করে দিয়েছিল সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতি। প্রথম থেকেই এই বাজারের যাবতীয় দেখভাল করে আসছে পঞ্চায়েত সমিতি। পরিবর্তে বাজারের প্রায় ২০০ স্থায়ী ব্যবসায়ী ও কয়েকশো অস্থায়ী বিক্রেতার কাছ থেকে নিয়মিত ভাড়া সংগ্রহ করা হয়। বিক্রেতাদের দাবি, ঠিক ছিল, এই সংগৃহীত অর্থ দিয়ে বাজারের সামগ্রিক উন্নয়ন করা হবে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে এই বাজারটির কোনও সংস্কার হচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অভিযোগ তুলেছেন নিয়মিত এখানে আসা ক্রেতারাও। সম্প্রতি পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়, ভাড়ার অঙ্ক বাড়ানো হবে। পঞ্চায়েত সমিতির এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

পঞ্চায়েত সমিতির তরফে অবশ্য দাবি করা গিয়েছে, বাজরটি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। সেই চুক্তিতে ১৪টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, দোকানঘরের ভাড়া বৃদ্ধি। দু’মাসের ভাড়া বাকি পড়লে দোকানঘর দখল করার ক্ষমতা, পঞ্চায়েত সমিতির অনুমতি ছাড়া দোকানঘর হস্তান্তর করতে না পারা ও প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে দোকানের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব।

Advertisement

কিন্তু, বাজার সমিতির তরফে পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা এই শর্ত মানবে না। উল্টে, তাদের তরফে বাজারের উন্নয়ন সংক্রান্ত একাধিক দাবিসনদ পেশ করা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে বাজারের সব দোকানঘরের আমূল সংস্কার, বাজারের মধ্যে একটি শৌচাগার তৈরি ও রাতে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েনের ব্যবস্থা। বিক্রেতাদের এই দাবিগুলিকে সমর্থন করেছেন এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের অভিযোগ, বাজারের নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়। ফলে, অপরিষ্কার হয়ে থাকে এলাকা। তারই মধ্যে ক্রেতাদের হাঁটাচলা করতে হয়। কোনও শৌচাগার না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা, দু’পক্ষই সমস্যায় পড়েন। রূপনারায়ণপুর বাজার সমিতির সভাপতি নিরাপদ পালের বক্তব্য, ‘‘আমদের পক্ষে পঞ্চায়েত সমিতির সব শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছি। একই সঙ্গে বাজারের সামগ্রিক উন্নয়নেরও প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করি সমিতির কর্তারা আমাদের সেই সব আর্জি শুনবেন।’’

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ প্রতি দিন যে অর্থ সংগ্রহ করা হবে, সে ব্যাপারেও স্বচ্ছতা রাখার আবেদন জানানো হয়েছে বাজার সমিতির তরফে। কারণ অভিযোগ উঠেছে, বছর কয়েক আগে বাজার থেকে সংগৃহীত টাকা সমিতির ভাঁড়াড়ে ঠিক মতো জমা পরেনি। ফলে, বাজারের উন্নয়নও ঠিক মতো হয়নি। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বার্থেই কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি সবাই তা মানবেন।’’ তিনি জানান, আজ, সোমবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে তাঁর আশা। সংগৃহীত অর্থ যেন ঠিক ভাবে পঞ্চায়েত সমিতির তহবিলে জমা পড়ে, তা কঠোর ভাবে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement