রানিগঞ্জ-আসানসোল শিল্পাঞ্চলে কল-কারখানার পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দূষণও। কিন্তু শহরের পরিবেশকর্মী ও চিকিৎসকদের অভিযোগ, দূষণ মাপার উপযুক্ত যন্ত্র নেই শিল্প-শহরে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সুত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল ও জামুড়িয়া পুর ভবন, বার্নপুরের ইস্কো ক্লাব এবং দামোদরের পাড়ে একটি সিমেন্ট কারখানায় দূষণ পরিমাপের জন্য চারটি যন্ত্র রয়েছে। যদিও পরিবেশকর্মীদের দাবি, যন্ত্রগুলি স্বয়ংক্রিয় নয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখার আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘যন্ত্রগুলি ঠিক ভাবেই শহরের দূষণ মাপছে। পরিমাপের ফলাফল নিয়মিত পর্ষদের ওয়েবসাইটেও দেওয়া হয়।’’ যদিও চিকিৎসকদের দাবি, বর্তমান পরিকাঠামোয় ১০ মাইক্রন পর্যন্ত ঘনত্বের ধূলিকণা মাপা সম্ভব হয়। কিন্তু শহরের বাতাসে ভাসতে থাকা ২.৫ মাইক্রন বা তার থেকেও বেশি সূক্ষ ধূলিকনা মাপা যায় না। আরও অভিযোগ, গাড়ির বা জেনারেটরের ধোঁয়া থেকে ছড়ানো দূষণও মাপা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসক সৈকত বসুর দাবি, ‘‘প্রথমে দূষণের উৎসগুলি চিহ্নিত করতে হবে। তার পরে কোন উৎস থেকে কী পরিমাণ দূষণ ছড়াচ্ছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে পরিমাপ করার উপযোগী যন্ত্র ব্যবহার করতে হবে। শহরে দূষণ পরিমাপের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে না।’’ এ ছাড়া এই পরিকাঠামোয় শহরের কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় দূষণের মাত্রাও বোঝা যায় না বলে দাবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পর্যদ কর্মীও জানান, বায়ু দূষণ মাপার পর্যাপ্ত ও অত্যাধুনিক পরিকাঠামো না থাকায় মাঝেসাঝেই সমস্যায় পড়তে হয়। শহরবাসীর অভিযোগ, খনি-এলাকায় ক্রমবর্ধমান দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকা নিয়ে আগেও বেশ কয়েক বার পরিবেশকর্মী ও চিকিৎসকেরা প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। কিন্তু দূষণ পর্যদের হুঁশ ফেরেনি।
পর্যদ সূত্রে খবর, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আসানসোলে একটি অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় দূষণ পরিমাপের যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ করা হয়। দফতরের আসানসোল শাখার একটি সূত্রের দাবি, মহকুমাশাসকের আবাসন লাগোয়া এলাকায় যন্ত্রটি বসানো হচ্ছে। ওই যন্ত্রটি দিয়ে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকনা ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলির পরিমাপ করা যাবে। মিলবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসও। পর্ষদের আসানসোল শাখার আধিকারিক সুদীপবাবুর দাবি, ‘‘যন্ত্রটি বসানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে।’’ পর্ষদকর্মীদের আশা, স্বয়ংক্রীয় যন্ত্রটি কাজ শুরু করলে দূষণ প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপও সহজে করা যাবে।