বাতিল নোট কোথায় কাজে লাগবে, এই ভেবে শহরের বাসিন্দারা আতান্তরে। দু’চার হাজার টাকার নোট বদল করতে শহর জুড়ে ব্যাঙ্ক, ডাকঘরে চোখে পড়ছে লম্বা লাইন। এই পরিস্থিতির সুফল ঘরে তুলতে আসানসোল পুরসভার টেক্কা সেই বাতিল নোটই। রবিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, করদাতারা চাইলে বাতিল নোটে আগামী পাঁচ বছরের রাজস্ব অগ্রিম জমা দিতে পারেন।
৫০০-১০০০ নোটের জেরে কোথাও ব্যবসা মার খাচ্ছে, কোথাও বা বেতন দিতে পারছেন না কারখানা কর্তৃপক্ষ। কোথাও বা বুধবার থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও নোট বদল করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় রবিবার পুরসভার তরফে জানানো হয়, পুরনো নোটে আগামী পাঁচ বছরের রাজস্ব অগ্রিম জমা দিতে গেলে, শুধুমাত্র করদাতাদের নিজেদের প্যানকার্ডের ফটোকপি জমা করতে হবে। শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির আশা, ‘‘এর ফলে এককালীন হারে পুরসভার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে। পুরনো নোট বদলের ঝামেলা থেকেও খানিকটা মুক্তি পাবেন করদাতারা।’’
পরিস্থিতির এমন ফায়দা তোলার পরিকল্পনা কী ভাবে মাথায় এল? পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পরেই করদাতাদের মধ্যে বকেয়া রাজস্ব জমা দেওয়ার প্রবণতা আচমকা খানিকটা বেড়ে গিয়েছে। পুরসভার কর দফতরের আধিকারিক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে বেশ কিছু সময়ের বকেয়া রাজস্ব জমা করছেন করদাতারা। এই সিদ্ধান্তে পুরসভার ভাঁড়ারে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই আসানসোলে এমন অনেক করদাতা রয়েছেন, যাঁরা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শহরের বাইরে রয়েছেন। অথচ স্থাবর সম্পত্তির কর দিতে প্রতি বছর তাঁদের আসতে হয়। অনেক সময় নিয়ম করে আসতে না পারায় বহু রাজস্ব বকেয়াও পড়ে থাকে। সম্প্রতি এমনই কয়েক জন করদাতা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক বছরের রাজস্ব অগ্রিম নেওয়ার অনুরোধ করেন। এর পরেই জিতেন্দ্রবাবু সিদ্ধান্ত নেন, আগামী এক সপ্তাহ বাতিল নোটে রাজস্ব জমা নেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রে খবর, গত বছর আসানসোল, রানিগঞ্জ, কুলটি ও জামুড়িয়া থেকে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। সেই আয় আরও বাড়াতেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন পুরকর্তারা।