Admission In Class XI

একাদশে ভর্তি কমে কি জোড়া কারণ

২০২২-এর মাধ্যমিকে দুর্গাপুর এভিবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২ জন, রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪০ জন এবং আসানসোল চেলিডাঙা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২১ জন পরীক্ষা দিয়েছিল।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৩ ০৭:৩২
Share:

কমেছে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সংখ্যা। প্রতীকী চিত্র।

গত বছরের তুলনায় এ বছর জেলা থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়ার সংখ্যা কম। স্বাভাবিক ভাবেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রেও গত বছরের তুলনায় এ বার ভর্তির সংখ্যাও কম বলে পর্যবেক্ষণ স্কুলগুলির। কিন্তু সাদা চোখে বিষয়টি এমন মনে হলেও, এর নেপথ্যে সামগ্রিক ভাবে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স বাড়ানো, দীর্ঘদিন স্কুল ছুটি থাকার মতো দু’টি কারণ কাজ করছে বলে অভিমতওয়াকিবহাল মহলের।

Advertisement

২০২২-এর মাধ্যমিকে দুর্গাপুর এভিবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২ জন, রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪০ জন এবং আসানসোল চেলিডাঙা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২১ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে যথাক্রমে ১৯৫, ১১৪ এবং ১০৫ জন উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু এ বছর এই তিনটি বিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ১২৪, ৭৬ ও ৬০ জন পরীক্ষা দিয়ছিল। তাদের মধ্যে ১১৫, ৫২, ৫৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। দুর্গাপুর এভিবি উচ্চ বিদ্যালয়ে গত বছর কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে ৯৬ ও ১৫ জন ভর্তি হয়। এ বার ২২ মে থেকে সব স্কুলেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু দু’টি বিভাগে ওই স্কুলে যথাক্রমে সাত ও ১২ জন ভর্তি হয়েছে।

কেন এই অবস্থা? দুর্গাপুরের স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব পালের মত, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে রাজ্য সরকার শিশু শ্রেণি চালু করে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার বয়স পাঁচ বছর (ফাইভ প্লাস) থেকে বাড়িয়ে ছ’বছর (সিক্স প্লাস) করে দেয়। সে বছর যারা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল, তারাই এ বছর পরীক্ষা দিয়েছে। ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, উত্তীর্ণ ও ভর্তি হওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে। একই অভিমত আসানসোল চেলিডাঙা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) পূর্ণচন্দ্র ঘোষেরও।

Advertisement

পাশাপাশি, শিক্ষকদের একাংশের ধারণা, ২০১৯, ২০২০, ২০২১-এ যারা অষ্টম, নবম শ্রেণির বার্ষিক ও দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছিল, তাদের সবাইকে উত্তীর্ণ করে দেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রী বাছাই করা হয়নি। তারাই ২০২২-এ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ায় পরীক্ষার্থী এবং উত্তীর্ণের সংখ্যা ছিল বেশি। এ বার তেমনটা না হওয়ায় এমন পরিসংখ্যানসামনে আসছে।

সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় কিন্তু এই অবস্থার জন্য রাজ্যের শিক্ষানীতিকেই কার্যত দায়ী করছেন। তিনি জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলে গত বছর কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে ৯৩ ও ১২ জন ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু এ বার সোমবার পর্যন্ত দু’টি বিভাগে যথাক্রমে ৪০ ও ১২ জন ভর্তি হয়েছে। তাঁর মতে, “পরীক্ষার্থী ও ভর্তির সংখ্যা কমার অন্যতম কারণ স্কুলে অনন্ত ছুটি।” মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন তিনি। তাঁর মতে, স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধের পরে ২০২২-এর জুলাইয়ে চালু হয়। কিন্তু তার পরেও নানা সময়ে ছুটির কারণে, নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে অনেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়নি। এই স্কুলে ৯২ জন দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও, মাধ্যমিক দেয় ৭৬ জন। তাপসের ক্ষোভ, “নিয়মিত স্কুল চালু না থাকায় অনেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহটা হারিয়ে ফেলেছে।”

তবে, জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স বাড়িয়ে দেওয়াটাকেই মূল কারণ বলে মনে করছেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুনীতি সাঁপুইও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নন। তাঁরও বক্তব্য, “আমাদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, আগামী বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। একাদশে ভর্তিও বাড়বে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement