শাসকের হাতে নথিপত্র তুলে দিতে পারেন বর্তমান পুরপ্রধান তৃণমূলের বুর্ধেন্দু রায়। —ফাইল চিত্র।
বর্ধমানের পরে প্রশাসক বসতে চলেছে গুসকরা পুরসভাতেও। বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে শনিবার। সে দিন পুরসভার মাসিক বৈঠকের পরেই প্রশাসকের হাতে নথিপত্র তুলে দিতে পারেন বর্তমান পুরপ্রধান তৃণমূলের বুর্ধেন্দু রায়। রাজ্য পুর দফতরের যুগ্ম সচিব এস দাস এক নির্দেশে বর্ধমান সদরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে গুসকরার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করার কথা জানিয়েছেন। তিনি রবিবার থেকে প্রশাসকের দায়িত্ব সামলাবেন।
সপ্তাহখানেক আগেই বর্ধমান পুরসভায় প্রশাসকের দায়িত্বভার নিয়েছেন মহকুমাশাসক (বর্ধমান উত্তর) পুষ্পেন্দু সরকার। সাধারণত, পুরসভার প্রশাসক হিসেবে মহকুমাশাসককেই দায়িত্ব দিয়ে থাকে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কিন্তু রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন ও বড় পুরসভার দায়িত্ব নেওয়ার পরে গুসকরার দায়িত্বও বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসকের কাঁধে দিতে অনিচ্ছুক ছিলেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি পুর দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরই মহকুমাশাসকের বদলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ এসেছে।
এর আগেও দু’দফায় প্রায় সাড়ে তিন মাস গুসকরা পুরসভায় প্রশাসক হিসেবে কাজ চালিয়েছেন মহকুমাশাসকেরা। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই তৃণমূলের পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াইয়ের মেয়াদ শেষ হয়। তার পরেই গুসকরার প্রশাসক হিসেবে মহকুমাশাসক দায়িত্ব নেন। সে বছর ২২ অক্টোবর পুরপ্রধানের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে’ পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে টালবাহানা তৈরি হয়। ৪ নভেম্বর ফের পুরসভার শপথগ্রহণ হয়। সে দিন পুরপ্রধান হিসেবে বুর্ধেন্দু রায়ের নাম ঘোষণা হয়।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য আলমগীর মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতে ভোট সুষ্ঠু ভাবে করতে দিচ্ছে না। পুরসভায় ভয়ে ভোট পিছিয়ে দিচ্ছে। ভোট মানেই তৃণমূলের কাছে আতঙ্ক! সেই সঙ্গে উন্নয়নও এগোতে দিচ্ছে না তৃণমূল।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি (বর্ধমান) সন্দীপ নন্দী দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল উন্নয়ন নয়, বাহিনীর ভরসায় ভোট করে। এ ভাবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ায় মনে হচ্ছে, তৃণমূলের অন্দরে বাহিনী কম পড়েছে?’’ প্রবীণ তৃণমূল নেতা তথা গুসকরার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “আমরা মানুষের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। ভোট নিয়ে চিন্তা করি না। ভোটের দিকে তাকিয়ে রাজনীতিও করি না।’’