জলমগ্ন এলাকার চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ধান দেওয়া হবে।—ফাইল চিত্র।
জলমগ্ন এলাকার চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ধান দেওয়া হবে বলে জানালেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। শনিবার দুপুরে জেলাশাসক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দুর্গত এলাকার ব্লকগুলিতে রাস্তাঘাট ও নদী বাঁধ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংস্কার করা হবে। জল নামলে নানা রোগ ঠেকাতে এখন থেকেই বিভিন্ন গ্রামে চিকিৎসক দল পাঠানো হবে। এ ছাড়া প্লাবিত জলমগ্ন এলাকা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। তা সত্ত্বেও এনডিআরএফ ও এসডিআরএফের দলকে আরও এক দিন জেলায় রেখে দেওয়া হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৩১টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
দামোদরের বাঁধ ভেঙে জামালপুরের অমরপুর-শিয়ালা গ্রাম, মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে মাধবডিহির বড় বৈনান ও গোতান গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। দ্বারকেশ্বর নদীর জল উপচে উচালন গ্রাম পঞ্চায়েতও ক্ষতিগ্রস্ত। এ দিন বিকেলে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, তৃণমূল নেতা উত্তম সেনগুপ্তরা জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। স্বপনবাবু বলেন, “মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়া হয়েছে। রায়না ২ ও জামালপুর ব্লকে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরকে শিবির করতে বলা হয়েছে।” জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ অমল দলুই জানান, আজ, রবিবার থেকে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে শিশুখাদ্য পাঠানো হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গত এলাকায় ২১টি চিকিৎসক দল গিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরু করেছে। পানীয় জলের সমস্যার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পানীয় জলের ‘পাউচ প্যাকেট’ পাঠাতে শুরু করেছে দুর্গত এলাকাগুলিতে। জামালপুর ও রায়না ২-এ ৫০ হাজার প্যাকেট পানীয় জল সরবরাহ করা হয়েছে। রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনসার আলি বলেন, “জল নামতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। অনেকে ত্রাণ শিবির থেকে বাড়ির পথও ধরেছেন।” জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ৬২ হাজার কৃষি জমি জলের তলায় চলে গিয়েছিল। তার মধ্যে হাজার একরের কাছাকাছি বীজতলা ডুবে গিয়েছিল। সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করা হচ্ছে।