সরকারি প্রকল্পে জমি স্বেচ্ছায়, সম্মানিত ১৫

সরকারি প্রকল্পে জমি দিতে উৎসাহিত করায় উদ্যোগী হল প্রশাসন। তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ১৫ জন জমিদাতাকে সম্মানিত করল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

শংসাপত্র প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র

কয়েক খণ্ড জমির জন্য আটকে প্রকল্প— এমন উদাহরণ ভুরিভুরি। রাস্তা, জলপ্রকল্প থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি, জমিজটে আটকে পড়েছে ছোট-বড় বহু উদ্যোগই। এমনকী, বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা নিয়ে আদালতে মামলা রুজুর ঘটনাও ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সেই জেলাতেই সরকারি প্রকল্পে জমি দিতে উৎসাহিত করায় উদ্যোগী হল প্রশাসন। তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ১৫ জন জমিদাতাকে সম্মানিত করল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এ ভাবে জমিদাতাদের সম্মানিত করার উদ্যোগ রাজ্যে প্রথম। সরকারি প্রকল্পে স্বেচ্ছায় জমিদাতাদের আমরা নানা অনুষ্ঠানে সম্মানিত করব। তাতে অন্য জমির মালিকেরাও সামাজিক প্রকল্পের গুরুত্ব বুঝতে পেরে ন্যূনতম জমি দিতে উৎসাহিত হবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’’ শুক্রবারের অনুষ্ঠানে ১৫ জন জমিদাতার মধ্যে ৫ জনের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্মানিত ১৫ জনের মধ্যে কাটোয়া ২ ও মন্তেশ্বর ব্লকের ৫ জন করে, কেতুগ্রাম ২ ও পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দু’জন এবং কালনা ২ ব্লকের এক জন রয়েছেন। তাঁরা সজলধারা প্রকল্প, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, কর্মতীর্থ প্রকল্প, গ্রামীণ হাট তৈরির মতো নানা প্রকল্পে নিঃশর্তে জমি দান করেছেন।

Advertisement

শংসাপত্র হাতে নিয়ে কাটোয়া ২ ব্লকের সিঙ্গি গ্রামের মিতালি সাহা বলেন, ‘‘মাত্র সাড়ে তিন শতক জায়গার জন্য আমাদের গ্রামে কর্মতীর্থ প্রকল্প আটকে যাচ্ছিল। পঞ্চায়েতের কর্তারা জমির জন্য হাপিত্যেশ করছিলেন। বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলে আমি স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি হয়েছিলাম। তাই তো প্রশাসন সম্মান জানাল।’’ ওই ব্লকেরই করুই গ্রামের যুবক হাসিরুল শেখ গ্রামের সজলধারা প্রকল্পের জন্য দেড় শতক জমি দিয়েছেন। সেখানে এখন ওই প্রকল্প চালু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এইটুকু জমির জন্য গ্রামের মানুষ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হবেন, এই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল। শেষে আমি ওই জমি দিলাম। তাতে কত মানুষ উপকৃত হবেন!’’ অঙ্গনওয়াড়ির জন্য ২ শতক জমি দান করেছেন অধরচন্দ্র দে। তাঁর কথায়, ‘‘আশা করি, আমাদের দেখে আরও অনেকে সরকারের ছোট-ছোট প্রকল্পে জমি দেবেন। তাতে গ্রামের মানুষ নানা ভাবে উপকৃত হবেন।’’

১৫ জনকে বাছা হল কী ভাবে? জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিডিও-রা একটি তালিকা পাঠিয়েছিলেন। তা থেকে দেখা যায়, এই ১৫ জনের জমি সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তাই তাঁদের চিঠি দিয়ে প্রজাতন্ত্রের দিবসের মঞ্চে ডেকে পাঠানো হয়। জেলাশাসক জমিদাতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন, সে ভরসা আমাদের রয়েছে। যাঁরা সরকারি প্রকল্পে স্বেচ্ছায় জমি দান করবেন, জেলা প্রশাসন সম্মানিত করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement